বাখমুত ঘিরে ফেলেছেন রুশ সেনারা

পাশের শহর চাসিভ ইয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী প্রধান সড়কটির নিয়ন্ত্রণ নিতে এখন ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চলছে।

বাখমুত ঘিরে ফেলেছেন রুশ সেনারা
বাখমুত ঘিরে ফেলেছেন রুশ সেনারা

প্রথম নিউজ, ডেস্ক: রুশ সেনারা বাখমুত শহর ঘিরে ফেলছেন। পাশের শহর চাসিভ ইয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী প্রধান সড়কটির নিয়ন্ত্রণ নিতে এখন ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চলছে। গতকাল বুধবার পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার নিয়োগ করা এক কর্মকর্তা এ দাবি করেছেন। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের রুশ-নিয়ন্ত্রিত অংশের প্রশাসক দেনিস পুশিলিনের ঘনিষ্ঠ ইয়ান গাগিন বলেন, ‘বাখমুত এখন কার্যত ঘেরা। আমাদের বাহিনী শহরের চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলার কাজ গুটিয়ে আনছে। এখন চাসিভ ইয়ার-বাখমুত মহাসড়কে লড়াই চলছে। এর আগে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বাখমুতের আশপাশের কয়েকটি এলাকা দখলের দাবি করে। এসব এলাকায় রুশ সেনাদের পাশাপাশি ভাড়াটে ওয়াগনার গ্রুপের সেনারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত বছরের মে মাসের পর রাশিয়া প্রায় ছয় মাস উল্লেখযোগ্য কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি ইউক্রেনে। এ সুযোগ দারুণ ব্যবহার করেছে ইউক্রেন। খারকিভ ও খেরসন অঞ্চলের বহু এলাকা রাশিয়ার কাছ থেকে তারা ছিনিয়ে নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছিল, শীত বাড়লে রাশিয়া আবার আক্রমণ শুরু করবে। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি ইউক্রেনকে উন্নত ট্যাংক পাঠানোর ঘোষণা দেয়। এর পর থেকে ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। এর মধ্যেই সোলেদার শহর দখল করে নিয়েছে রুশ বাহিনী। দোনেৎস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের শক্তিশালী অবস্থান সোলেদার-বাখমুত এলাকায়। সোলেদারের পর বাখমুত ছিল রুশ সেনাদের লক্ষ্য। ইউক্রেনীয় সেনাদের পালানোর জন্য এখনো একটি রাস্তা খোলা আছে, সেটি দখলেই লড়াই চলছে এখন। ওই রাস্তা রাশিয়ার দখলে চলে গেলে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে বাখমুত।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনের জন্য ২০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তা সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে দূরপাল্লার রকেট, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নানা সরঞ্জাম, ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাংকবিধ্বংসী অস্ত্রের মতো অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র। এ সপ্তাহেই সহায়তার ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে অধিকাংশ অর্থই আসবে ইউক্রেনের জন্য তৈরি করা বিশেষ তহবিল ইউক্রেন সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্স ইনিশিয়েটিভ নামের উদ্যোগ থেকে। এতে বাইডেন প্রশাসন তাদের অস্ত্রভান্ডার থেকে অস্ত্র দেওয়ার পরিবর্তে এ খাতের প্রতিষ্ঠান থেকে কিনে দেবে। এর মধ্যে রয়েছে বোয়িং কোম্পানির তৈরি করা বিশেষ বোমার মতো অস্ত্রও।

গতকাল ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা হিসেবে দেওয়া দূরপাল্লার রকেটে শুধু সংঘাত বাড়বে। এতে রুশ বাহিনীর লক্ষ্যে কোনো পরিবর্তন আসবে না। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলার কোনো পরিকল্পনা নেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। ইউক্রেনকে মার্কিন সহায়তা প্রসঙ্গে পেসকভ আরও বলেন, ‘এতে উত্তেজনা আরও বাড়বে। আমরা বিষয়টি দেখছি। এখন আমাদের বাড়তি প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কিন্তু তাতে আমাদের লক্ষ্যের পরিবর্তন হবে না।’

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ার বাহিনী। মস্কোর পক্ষ থেকে একে বিশেষ সামরিক অভিযান হিসেবে বর্ণনা করা হয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, রাশিয়ার নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ও মস্কোকে দুর্বল করতে পশ্চিমা প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে এ অভিযান জরুরি ছিল। তবে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা দাবি করে, ভৌগোলিক সীমা বাড়াতেই এ হামলা করেছে রাশিয়া। খুনি শুরু করবে। তাদের ষড়যন্ত্র সেইভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দেশটাকে অন্যদিকে নিয়ে যেতে চায়।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: