লোনের ফাঁদে ফেলে ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেফতার ২

প্রথম নিউজ, অনলাইন: সহজ শর্তে বিদেশি ব্যাংক থেকে বিনা ডকুমেন্টে ঋণ দেওয়ার নামে এক ব্যবসায়ীর ২ কোটি টাকা হাতিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতাররা হলেন— মো. সফিকুল ইসলাম ও বেসিক ব্যাংক ও প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির চাকরিচ্যুত পরিচালক ড. সিপার আহমেদ। গত ১৯ জুন রাজধানী পৃথক এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) একটি দল। বৃহস্পতিবার রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁও সংস্থাটির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, ভুক্তভোগী মো. নুর আমিন শাহ দিনাজপুর জেলার চিলিবন্দরের এমএইচ ব্রিকফিল্ড এবং অটো রাইস মিলের মালিক। ব্যবসার সুবাদে পরিচিত ব্যবসায়ী খন্দকার শাহ্ আলমের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ভুক্তভোগী তার সঙ্গে ব্যবসাকে প্রসারিত করতে টাকার সমস্যার বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপর শাহ্ আলম মো. সফিকুল ইসলামকে চক্রের অপর সদস্যকে ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি সহজ শর্তে ৫ শতাংশ সুদে লঙ্কা বাংলা ও ব্র্যাক ব্যাংকসহ বিদেশি ব্যাংক থেকে ৫০ কোটি টাকা লোন করে দেবে বলে প্রলোভন দেখায়।
এরপর গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভুক্তভোগী ও শাহ্ আলম বনানী থানাধীন শেরাটন হোটেলে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ভুক্তভোগীকে চক্রের আরেক সদস্য ড. সিপার আহমেদ বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়।
এ সময় ড. সিপার যে কোনো ব্যাংক বা বিদেশি ব্যাংক থেকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন করে দিতে পারবে বলে জানায়।
এ জন্য তাদেরকে দুই শতাংশ কমিশন দিতে হবে এবং নানাবিধ খরচ কথা বলে অগ্রিম টাকা দাবি করে। এরপর প্রথমে ১০ লাখ ও পরবর্তীতে ৬ ধাপে নগদ ৭৬ লাখ টাকা নেয়। এরপর বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে ধাপে ধাপে ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ২ লাখ টাকা এবং মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ২৬ লাখ টাকাসহ মোট ২ কোটি ৬ লাখ টাকা নেয়।
পিবিআই কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন বলেন, ভুক্তভোগীর বিশ্বাস স্থাপনের জন্য চক্রটি তাদের নিজ স্বাক্ষরিত ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ১৩টি চেক দেয় এবং নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিনামা করে।
এছাড়াও ভুক্তভোগীর পরিচালিত এতিমখানা জন্য জাইকা থেকে ৭ কোটি টাকা অনুদান এনে দেওয়ার কথা বলে তার স্বাক্ষরিত ব্যাংকের ৮টি চেক হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী তাদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন।