প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশী নেত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ মিত্র সালমান এফ রহমানের ছেল আহমেদ শায়ানের মালিকানাধীন লন্ডনের দু’টি সম্পত্তি জব্দ করেছে ব্রিটেনের জাতীয় অপরাধ সংস্থা ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)। বৃহস্পতিবার (২২ মে) ফাইনান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশী নেত্রী শেখ হাসিনার এক ঘনিষ্ঠ মিত্রের ছেলের মালিকানাধীন লন্ডনের দু’টি সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ পেয়েছে ব্রিটেনের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ)। জব্দ আদেশ হলো আদালতের এমন নির্দেশ, যা কোনো সম্পত্তির অপচয়, মালিকানা স্থানান্তর ইত্যাদি ঠেকাতে জারি করা হয়। কোম্পানি ও সম্পত্তির নথি অনুসারে, এই সম্পত্তিগুলোর মালিক সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান। তিনি বাংলাদেশী ব্যবসায়ী এবং শেখ হাসিনার বিনিয়োগ উপদেষ্টা। বাংলাদেশী শিল্পপ্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোর সহ-প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।
এই সম্পত্তিগুলোর একটি হচ্ছে লন্ডনের ১৭ গ্রোসভেনর স্কয়ারে একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, যা ২০১০ সালে ৬.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা হয়েছিল। অপরটি উত্তর লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেনে অবস্থিত, যা পরের বছর ১.২ মিলিয়ন পাউন্ডে অধিগ্রহণ করা হয়। ফাইলিং অনুযায়ী এমন তথ্য পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যের ভোটার তালিকার রেকর্ড অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বোন এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক নগরমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানা গ্রেশাম গার্ডেনের ওই সম্পত্তিতে বসবাস করতেন। তবে তিনি এখনো সেখানে আছেন কিনা, সেটি স্পষ্ট নয়।
এনসিএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এনসিএ একটি চলমান সিভিল তদন্তের অংশ হিসেবে লন্ডনের ১৭ গ্রোসভেনর স্কয়ার এবং লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেনের সম্পত্তির বিরুদ্ধে জব্দ আদেশ পেয়েছে। বর্তমানে এ বিষয়ে আমাদের আর কোনো মন্তব্য করার সুযোগ নেই।’ বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন ফাইনান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছেন, সালমান এবং শায়ান আত্মসাতের তদন্তে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত।
ফাইলিং অনুসারে দেখা গেছে, সম্পত্তিগুলোর মালিকানা রয়েছে আইল অফ ম্যানে নিবন্ধিত একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে। শায়ানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমাদের মক্কেল যেকোনো অভিযোগে জড়িত থাকার বিষয়টি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করছেন। তিনি অবশ্যই যুক্তরাজ্যে যেকোনো তদন্তে সহযোগিতা করবেন।’
তারা আরো বলেন, ‘এটি সর্বজনবিদিত যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। সেখানে শত শত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমরা আশা করি, যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ এই প্রেক্ষাপটটি বিবেচনায় নেবে।’ শেখ রেহানার সাথে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।