প্রতারণার অভিযোগে আমার বাড়ি আমার ঘর’র এমডির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: মশিউর রহমান, একসময়ে ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল। সেখান থেকে ভূমিদখল, বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা ও জাতিয়াতির মাধ্যমে বনে গেছেন আবাসন ব্যবসায়ীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। প্রতারণার মাধ্যমে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। জাল দলিল দিয়ে জমি বিক্রি, রাস্তা ব্যাতিত প্লট বিক্রি, চেক জালিয়াতি, ভুয়া চুক্তিপত্র, বহিরাগত মাস্তান দিয়ে জমি দখল, পুলিশ সদস্যদের দিয়ে হুমকিসহ নানা দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন শেয়ার হোল্ডারদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন মশিউর রহমান।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধনীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আমার বাড়ি আমার ঘর লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পুলিশ কনেস্টবল মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
এসময় শেয়ার হোল্ডার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, উম্মে সালমা, দেবাশীষ চক্রবর্তী, নূরে আলম, সাইফুল ইসলাম, নাসিমা আক্তার, গোলাম মোস্তফা, আসাদুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম, হোসনে আরাসহ প্রায় ১৪৯ জন শেয়ার হোল্ডাররা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা বলেন, অনেক আশা নিয়ে জীবনের সঞ্চিত টাকার মাধ্যমে একটি মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের ব্যবস্থার জন্য আমরা ১৪৯ জন একত্রিত হই। ‘আমার বাড়ি আমার ঘর’ লি. এর মাধ্যমে ৩৮ কাটা জমি ক্রয় করি।
ক্রয়ের সময় এই আবাসনের মালিক মশিউর বলেছিলেন, জমি রেজিস্ট্রেশনের ৬ মাসের মধ্যে ১৪৯ জন শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে কমিটি করে রাজউক থেকে প্ল্যান পাশ ও বিল্ডিংয়ের কনস্ট্রাকশন শুরু এবং তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ করে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেবে মর্মে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু জমি ক্রয় করা হলেও আমার বাড়ি আমার ঘরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কনস্টেবল মশিউর রহমান ১৪৯ জনের শেয়ার হোল্ডারদের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্নভাবে মিথ্যা জালিয়াতি ও প্রতারণার করে আসছেন। ২০ ফুট রাস্তা দেখিয়ে জমি বিক্রি করলেও প্রজেক্টের জন্য কোনো ধরনের রাস্তা নেই। রাস্তা বৃদ্ধি ও ল্যান্ড ইউসেজ ক্লিয়ারেন্সের কথা বলে ৭৬ লাখ টাকা নিয়ে কোনো কাজ করেনি।
আরো জাল দলিল তৈরি করে অতিরিক্ত ২১ জনের শেয়ার বিক্রি করে আমাদের (১৪৯ জন) উপর চাপানোর চেষ্টা করছে। এইভাবে নানা প্রতারণা ও টাল বাহানার মাধ্যমে ২-৩ বছর অতিক্রম হওয়ার পরেও ফ্ল্যাট তো দূরের বিষয় আমাদের জমিও বুঝিয়ে দিতে পারেনি।
ভুক্তভোগীরা আরো বলেন, মশিউর যে সকল প্রতারণা করছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— রাস্তা ব্যতীত প্লট বিক্রি করা, জাল দলিল তৈরি করা, চেকে জালিয়াতি করা, ভুয়া পাওয়ার অফ এটর্নি ও চুক্তিপত্র দিয়ে নিজেকে মালিকানা বলা, শেয়ারহোল্ডারদের কাজের লোভ দেখিয়ে প্রতিপক্ষ বানানো, বহিরাগত মাস্তান পোষা ও শেয়ারহোল্ডারদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা, শেয়ারহোল্ডারদের জীবন নাশের চেষ্টা করা, ডিবি পুলিশদের দিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের হুমকি দেওয়া, ভুয়া ৩৩ লাখ টাকার বিল শেয়ারহোল্ডারদের চাপিয়ে দেওয়া, সম্পত্তির হিসাব ও রাজস্ব ফাঁকি দেওয়াসহ নানান ধরনের প্রতারণা করে আসছেন আমার বাড়ি আমার ঘরের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
এছাড়াও বর্তমানে মশিউর রহমান নিরীহ শেয়ারহোল্ডারদের বিরুদ্ধে উল্টো তিনটা মামলা করেছে। বাড্ডা থানা ম্যানেজ করে মিথ্যা ফৌজদারী মামলার হুমকি দিচ্ছেন।
ভুয়া ও জাল দলিল দিয়ে বিক্রি করা ২১ জনকে পার্শ্ববর্তী সরকারি জমি এবং পার্শ্ববর্তী মধু ও মোয়াজ্জেম সাহেবদের জমি জোর করে দখল করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।