মায়ের নাক ভেঙে দেওয়া সেই ছেলেটি এখন ৭৭-এ

মায়ের নাক ভেঙে দেওয়া সেই ছেলেটি এখন ৭৭-এ

প্রথম নিউজ, অনলাইন:   ব্রায়ান লারা হাফ প্যান্ট পরা বয়সে বহুবার প্রতিবেশীদের জানালার কাচ ভেঙেছেন। ইট মেরে নয়, ব্যাটে ঝড় তুলে। সকাল দেখে যেমন বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে, শৈশবেই লারা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন দুঁদে বাল্লেবাজ হবেন তিনি একদিন। পড়শিরা আকসার তার মায়ের কাছে নালিশ করতেন, আপনার দস্যি ছেলেটাকে সামলান। আমাদের জানালার কাচ একটাও আস্ত থাকছে না।

সুনীল গাভাস্কার প্রতিবেশীর জানালার কাচ ভেঙেছেন, কখনো এমনটি শোনা যায়নি। তিনি ভেঙেছিলেন তার মায়ের নাক। ভুল করে, দুর্ঘটনাবশত। ঘরে ব্যাট করছিলেন রাবারের বলে। সজোরে হাঁকিয়েছিলেন। বল সোজা গিয়ে আঘাত করে তার মায়ের নাকে। বাকিটা বুঝতেই পারছেন। এখানেও সেই একই কথা-মর্নিং শোজ দ্য ডে। সেই ‘মর্নিং’ এখন ‘ইভিনিং’। ৭৬ পেরিয়ে ১০ জুলাই ৭৭-এর চৌকাঠে পা রাখলেন প্রথম টেস্ট ক্রিকেটার হিসাবে ১০ হাজার রান করা সানি। সর্বকালের অন্যতম সেরা ওপেনার এবং নিশ্চিতভাবে সবচেয়ে সফলতম ব্যাটার, ১২৫ টেস্ট ও ১০৮ ওডিআইতে ১৩,২১৪ রান, ৩৫টি সেঞ্চুরি এবং ৭২টি ফিফটির স্বত্বাধিকারী ভারতের স্বাধীনতা লাভের দুই বছর পর মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে (বর্তমানে মুম্বাই) জন্মেছেন।

১৯৭১ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা ‘লিটল মাস্টার’ গাভাস্কার এখন ইংল্যান্ডে। সেখানে ভারত-ইংল্যান্ড তৃতীয় টেস্টের প্রথমদিন মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় জন্মদিনের উপহার-এক জোড়া জুতা। শু তার ভীষণ পছন্দের। লর্ডসের সবুজ গালিচায় গাভাস্কারের হাতে উপহার তুলে দিয়ে গৌরব কাপুর বলেন, ‘আপনি নাকি আপনার ছেলে আর নাতির জুতার দিকে ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকান।’ গাভাস্কার সপাটে বাউন্ডারি হাঁকান, ‘না না, ওরাই আমার শুয়ের দিকে তাকায়।’

১৯৭০-৭১-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজে তার শিহরণ জাগানো ডেব্যু সিরিজ আজও হয়তো দুচোখে স্বপ্নের দীপ হয়ে জ্বলে। চার টেস্টে চার সেঞ্চুরি। ১৫৪ গড়ে ৭৭৪ রান। শুরুতেই ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের প্রেমে পড়ে যান সানি। লাল বলের ক্রিকেটে রেকর্ড ৩৪ সেঞ্চুরির মধ্যে উইন্ডিজে ১৩ টেস্টে সাত সেঞ্চুরি। গড় ঈর্ষণীয় ৭০। যে ছেলেটি মায়ের নাক ভেঙেছিল, সে উইলোর ঐশ্বর্য দিয়ে নিজের নাক উঁচু করেছে। হ্যাপি বার্থডে গাভাস্কার।

ভারত ক্রিকেট