শেষ হাসি কার, চিটাগং নাকি বরিশালের?
প্রথম নিউজ, অনলাইন: পরদিন ফাইনাল অথচ তিনি কিনা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছিলেন! কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সতীর্থরা অনুশীলনে ঘাম ঝরালেও তাঁর কোনো হেলদোল ছিল না। ২০১৮-১৯ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সপ্তম আসরের ফাইনালের আগের দিন অনুশীলন না করার ব্যাখ্যায় তামিম ইকবাল বলেছিলেন, ‘আমার নিবেদন দেখতে পাবেন ম্যাচে।’
সত্যি সত্যি দেখাও গিয়েছিল। বিপিএলের ফাইনালে সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটার বনে গিয়েছিলেন।
অপরাজিত ১৪১ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে দলকে শিরোপা জেতানোর আগের দিন যেমন ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার, আজ আরেকটি ফাইনালের আগেও একই রকম নির্বিকার তিনি। অবশ্য মাঝখানে গত আসরের ফাইনালও খেলেছেন তামিম। তাঁর দল ফরচুন বরিশালও শিরোপা জিতেছে, যাতে ২৬ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে অবদান ছিল তামিমেরও। এবার সেটি ধরে রাখার ম্যাচে নামার আগে দলকে বেঁধে দেওয়া তামিমের শর্ত, ‘(আগের মতো) পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারলে সব কিছু পক্ষে আসবে।
’
আজ তাদের প্রতিপক্ষ চিটাগং কিংসের সামনে প্রথমবার শিরোপা জয়ের হাতছানি। বরিশাল যেখানে পঞ্চমবার ফাইনালে, সেখানে চিটাগংয়ের এটি দ্বিতীয়বার। একই মালিকানায় সর্বশেষ ২০১৩ সালে ফাইনালে খেলেছিল বন্দরনগরীর দলটি। এক যুগ পর এবার বিপিএল প্রত্যাবর্তনে শিরোপা ছোঁয়ার সুযোগ পেয়ে চিটাগংয়ের হেড কোচ শন টেইট বলছিলেন, ‘সবার চোখে বরিশাল শিরোপার দাবিদার হতেই পারে।
এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। তবে আমরাও খারাপ দল নই। জিতলে লোকে অবাক হবে না।’
মাঠের বাইরে চিটাগংকে নিয়ে অনেক আলোচনা থাকলেও মাঠে সেসবের প্রভাব ফেলতে দেয়নি দলটি। ফাইনালের পথে সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেছে।
এ জন্য চিটাগংকেও প্রশংসায় ভাসালেন তামিম, ‘মাঠের ক্রিকেটে তারা প্রমাণ করেছে, তারাই উপযুক্ত। এমন না যে শুধু সেমিতে (আসলে কোয়ালিফায়ার) এসে খেলেছে। টুর্নামেন্টজুড়েই দারুণ খেলেছে।’ প্রতিপক্ষকে নিয়ে গুণগান গাইলেও শিরোপায় চোখ রাখতে দিচ্ছেন না বরিশাল অধিনায়ক, ‘ট্রফি এমন জিনিস, যারা পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারাও চাইবে ছয়বার ধরতে। আমরাও অবশ্যই চাইব আবার নিতে।’ তবে সর্বশেষ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে যেভাবে হারিয়ে ফাইনালে এসেছে চিটাগং, সেটি আত্মবিশ্বাসের পালে বাড়তি হাওয়া দিচ্ছে টেইটকে, ‘চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ। টুর্নামেন্টের দুই সেরা দল। অবশ্যই চ্যালেঞ্জ থাকবে। গত রাতেও (দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার) এমন হয়েছে। যেকোনো দিকেই যেতে পারত ম্যাচটা।’
বরিশালের টানা দ্বিতীয় নাকি চিটাগংয়ের প্রথম, এমন আলোচনার মধ্যেই বিসিবি ফাইনালের সময় এক ঘণ্টা এগিয়ে এনেছে। নতুন সময় সন্ধ্যা ৬টা। প্রশ্নবিদ্ধ এবারের বিপিএলে শেষ মুহূর্তে এসে অবশ্য একটি ভুলও শুধরে নিয়েছে বিসিবি। গতকাল শুরুতে ফাইনালে ওঠা দুই দলের অধিনায়কের ট্রফির সঙ্গে ফটোসেশনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। বিকেল ৪টায় তামিম একই কথা জানানোর এক ঘণ্টা পর টনক নড়ে বিসিবির। রাতে ট্রফি নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল তামিম-মিঠুন। আজ এই হাসি ধরে রাখবেন কে?