আগামী ৫ বছরের মধ্যে সব রেকর্ড ভাঙবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা

আগামী ৫ বছরের মধ্যে সব রেকর্ড ভাঙবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে যে কোনো এক বছরের বার্ষিক তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ডকে ভাঙবে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে অন্তত ৮০ শতাংশ। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) এক প্রতিবেদনে এমনই শঙ্কার কথা বলা হয়েছে।  চরম আকারের খরা, বন্যা ও বনাঞ্চলে আগুনের পরিমাণ বাড়ায় এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। বৈশ্বিক তাপমাত্রা সবচেয়ে বেড়েছিল প্রাক-শিল্প যুগে। তবে ওই সময়ের থেকে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো এক বছরে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হবে বলে ডব্লিউএমওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, ২০৩০ সালের আগেই এমন পরিস্থিতি দেখতে হবে বিশ্ববাসীকে। আর ডব্লিউএমওর এ প্রতিবেদনের ভবিষ্যতদ্বাণীকে ‘শকিং’ বলে আখ্যা দিয়েছে বিজ্ঞানীরা। গার্ডিয়ান বলছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা মানুষের স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও প্রাকৃতিক ভূদৃশ্যে প্রভাব ফেলেছে। যদি জৈবাশ্ম জ্বালানি তথা তেল, গ্যাস, কয়লা ও গাছ পোড়ান বন্ধ না হয় তাহলে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। খুব কম সময়ের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ করে এ প্রতিবেদন দিয়েছে ডব্লিউএমও। তবে প্রতিবেদনে দীর্ঘমেয়াদি অনুমান করা হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, ২০২৫-২৯ বছরের গড় তাপমাত্রা প্রাক শিল্প-যুগের থেকে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকবে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে ৭০ শতাংশ। ডাব্লিউএমওর এ প্রতিবেদন প্যারিস জলবায়ু চুক্তির উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ওই চুক্তি করা হয়েছিল ২০ বছরের গড়কে লক্ষ্য করে।

২০২০ সালে ডাব্লিউএমও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। ওই সময় প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে যে কোনো এক বছর তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ। আর সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদনে সম্ভাবনা দেখানো হয়েছে ৮৬ শতাংশ।

২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো বার্ষিক তাপমাত্রা আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সীমা অতিক্রম করে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) তথ্যমতে, ১৮৫০ সালের পর গত বছর ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। ২০১৪ সালে তাপমাত্রার পরিমাণ এত বাড়াকে অকল্পনীয় বলে আখ্যা করা হয়েছিল।

বৈশ্বিক তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বেড়েই চলছে। এমনকি, পরিসংখ্যানে দুই ডিগ্রি বাড়ার সম্ভাবনাকে যৌক্তিক বলা হচ্ছে। ডাব্লিউএমওর সর্বশেষ প্রতিবেদনেও এমনটা বলা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের ১৫ ইনস্টিটিউটের দেওয়া মডেলেও বিষয়টিকে যৌক্তিক বলা হচ্ছে।

২০৩০ নাগাদ তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি বাড়তে পারে এমন সম্ভাবনা আগে ছিল এক শতাংশ। এমনকি, পাঁচ বছরের মধ্যে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বাড়াকে অসম্ভব বলা হত। তবে এল নিনো ও ব্যাপকহারে আর্কটিকের বরফ গলা ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে সম্ভব করে ফেলছে।

ডব্লিউএমওর প্রতিবেদনে কাজ করা আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ এডাম স্কেইফে বলেন, ‘এটা অবাক করার মতো। তবে ২ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়া যুক্তিসঙ্গত।’