গরুর হাটে পকেটমার থেকে সাবধান!

গরুর হাটে পকেটমার থেকে সাবধান!

প্রথম নিউজ, অনলাইন:  ঈদুল আজহা যত ঘনিয়ে আসছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গরুর হাটগুলো ততটাই জমে উঠছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত এসব হাটে একদিকে যেমন উৎসবের আমেজ থাকে, তেমনই অন্যদিকে কিছু অসাধু চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। পকেটমারি তেমনই একটি বড় সমস্যা, যা হাটে আসা সাধারণ মানুষকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

প্রতি বছরই কোরবানির হাটে পকেটমারির অসংখ্য ঘটনা ঘটে থাকে।
পকেটমাররা সাধারণত ভিড়ের সুযোগ নেয় এবং অসাবধানী ক্রেতাদের টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোন বা অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়। তাদের টার্গেট মূলত তারাই, যারা নগদ টাকা নিয়ে গরু কিনতে আসেন বা যারা মোবাইল ফোনে বেশি ব্যস্ত থাকেন।

পকেটমাররা বিভিন্ন কৌশলে তাদের কার্য সিদ্ধি করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

ভিড়ের সুযোগ: হাটে প্রচুর লোকসমাগম হয়, বিশেষ করে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত।
এই ভিড়কে কাজে লাগিয়ে পকেটমাররা দ্রুত তাদের কাজ সেরে ফেলে।

দৃষ্টি আকর্ষণ: অনেক সময় তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কাধাক্কি করে বা অন্য কোনোভাবে ক্রেতাদের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দেয়, যাতে তাদের কার্যকলাপে কেউ সন্দেহ না করে।

দলবদ্ধ কাজ: পকেটমাররা প্রায়শই দলবদ্ধভাবে কাজ করে। একজন পকেট মারলে অন্যজন তাকে আড়াল করে বা ভিড়ের মধ্যে মিশে যেতে সাহায্য করে।

লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিতকরণ: তারা আগে থেকেই লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করে রাখে, যেমন - যারা মানিব্যাগ প্যান্টের পেছনের পকেটে রাখেন বা যারা কাঁধের ব্যাগে টাকা রাখেন।

গরুর হাটে পকেটমারি থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি:

নগদ টাকা সাবধানে রাখুন: পারতপক্ষে বেশি নগদ টাকা হাটে নিয়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যদি একান্তই প্রয়োজন হয়, তাহলে টাকা এমনভাবে রাখুন যা সহজে পকেটমারদের নজরে না পড়ে। মানিব্যাগ পেছনের পকেটে না রেখে সামনের পকেটে রাখুন।

ব্যাগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: কাঁধের ব্যাগ বা ভ্যানিটি ব্যাগ ভালোভাবে আটকে রাখুন এবং সর্বদা নিজের সামনে রাখুন।

মোবাইল ফোন সাবধানে রাখুন: মোবাইল ফোন প্যান্টের পকেটে না রেখে ব্যাগের মধ্যে বা শরীরের কাছাকাছি রাখুন। হাটে মোবাইল ফোনে বেশি কথা বলা বা এটি নিয়ে ব্যস্ত থাকা এড়িয়ে চলুন।

সতর্ক থাকুন: হাটে ঢোকার আগে ও পরে চারপাশে নজর রাখুন। কোনো সন্দেহজনক ব্যক্তির গতিবিধি লক্ষ্য করলে সতর্ক হন।

পরিবার নিয়ে সতর্ক হন: যদি পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে হাটে যান, তাহলে তাদেরও সতর্ক থাকতে বলুন। ছোট বাচ্চাদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন।

পুলিশের সাহায্য নিন: যদি কোনো পকেটমারির ঘটনা ঘটে বা কাউকে সন্দেহ হয়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে হাটে কর্তব্যরত পুলিশ বা স্বেচ্ছাসেবকদের জানান।

ঈদ আনন্দের, তবে এই আনন্দ যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনায় ম্লান না হয়, সেদিকে আমাদের সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত। নিজ সচেতনতাই পারে পকেটমারির মতো ঘটনা থেকে আমাদের রক্ষা করতে।