চুপা সুশীল লীগ থেকে সাবধান বিএনপি

চুপা সুশীল লীগ থেকে সাবধান বিএনপি

প্রথম নিউজ, মতামত ও বিশ্লেষণ: বাহ বিএনপি বাহ একদল সুশীল নামধারী আওয়ামী লীগাররা কী সুন্দর করে পোড় খাওয়া, প্রতিবাদী কন্ঠস্বরের স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার হাতে হাতকড়া পর্যন্ত পড়িয়ে দিলো। মাত্র শুরু বিএনপি। অপেক্ষা করেন এমনি করে তৃণমূলের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে এই সুশীল লীগ। একবার নিজেদের সাহসী ছেলেদের  হত্যা করিয়েছে অপারেশন ক্লিন হার্ট করিয়ে। এবার করবে ভিন্ন ফরমেটে। চিন্তা করবেন না বিএনপি সব পত্রিকার প্রায় সব জেলা প্রতিনিধি আওয়ামী লীগের আর ঢাকা অফিসে আপনাদের নামধারী দুই একটা মাথা ছাড়া আর কিচ্ছু নেই। ওয়েট করেন জেলা প্রতিনিধি থেকে শুরু করে ঢাকা পর্যন্ত সব আওয়ামী সুশীলরা তৈরি আছে। এটাই শেষ সুযোগ। এবার নির্বাচিত হয়ে আসলে।এরপর কর্মীদের উপর বিএনপি এসব আওয়ামী সুশীলদের খপ্পরে পড়ে যে স্টিম রোলারটা চালাবে তারপর আর বিএনপি করার সাহসী লোক খুঁজে পাবেন না। লিখে রাখতে পারেন।

আজকে মিডিয়া লীগ ক্ষমতায় না আসতেই নানাভাবে বিএনপির টুটি চেপে ধরছে।যেমনি ধরেছিলো ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত। এই সুশীল প্রথম আলো কোথায় ছিলো যখন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে অফিস থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো। যখন সংগ্রাম পত্রিকার বয়োজ্যেষ্ঠ সম্পাদককে টেনে হিঁচড়ে তুলে নিয়ে নিয়েছিলো। কোথায় ছিলো এরা যখন আদালতে হাজির হতে গিয়ে মাহমুদুর রহমান সন্তান বয়সী ছাত্রলীগ, যুবলীগ দ্বারা হামলার শিকার হয়েছিলো। যখন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহরে কারওয়ান বাজারে ছিঁচকে ছাত্র লীগাররা ম্যাডামের গাড়িতে হামলা করেছিলো।কয় লাইন লিখে প্রতিবাদ করেছিলো সেদিন প্রথম আলো সহ সুশীলরা। করেনি কিন্তু! সোহরাব হাসানদের কলম তখন কোথায় ছিলো।
মুন্নী সাহার মতো বিডিআর বিদ্রোহে প্রকাশ্যে উসকানিদাতা সাংবাদিককে জনতা ঘেরাও করলে হয়ে যায় মব। ভুয়া নির্বাচনের কারিগর নুরুল হুদা কে বিপ্লবী জনতা ধরিয়ে দিয়ে হয়ো যায়। এরা কিসের মব।এরাই বিপ্লবী এরাই এদেশে ৫ আগস্ট ঘটিয়েছে। এদেরকে যারা মব বলছে এরাই হলো চুপা আওয়ামী লীগ। এরা এতোদিন কেন গ্রেফতার হলোনা এরাতো দেশেই ছিলো।তাহলে সরকার, তার গোয়েন্দা সংস্থা কী করলো।কই এই প্রশ্নতো করলোনা এই সুশীলরা। এটা নিয়ে তো একটা নিউজও করলোনা।করবেনা কারণ এই হঠাৎ প্রতিবাদী হয়ে ওঠা গ্রুপটাই আওয়ামী লীগের অংগ সংগঠন সুশীল লীগ।

বলা হয়েছিল আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে নামলে এক রাতের মধ্যে ১ লাখ নেতা-কর্মীকে মেরে ফেলা হবে। আওয়ামী লীগতো শুধু নামেইনি দেশ ছেড়ে মাথাসব পালিয়ে গেলো।কই কয় হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে বিএনপি। মোটাদাগে খুঁজলে একজনও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। বরং উল্টো ৫ আগস্টের পর বিএনপির অনেক নেতাকর্মী যৌথবাহিনীর হেফাজতে এবং গুপ্ত ও প্রকাশ্য হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের এতোটাই পোড়া কপাল যে তারা যতো জন প্রাণ হারায় তাদের সঠিক সংখ্যাটা পর্যন্ত বড় নেতারা জানেনা বা মনে রাখেনা।তাই ঠিকমতো সবা, সেমিনার বা টকশোতে বলতেও পারেনা।

আর আওয়ামী লীগ করা নেতাকর্মীদের বিরাট সৌভাগ্য যে ওরা যদি সড়ক দুর্ঘটনায় বা পেটের পীড়ায় বা নিজেদের মধ্যে কোন্দল করেও মারা যায় একদম শীর্ষ  থেকে ২ জন মারা গেলেও ফলাও করে বলে যে বিএনপি-জামাত আমাদের ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। যা বলে তা-ই নিউজ।চ্যালেঞ্জ করবে কে। সবই তো তাদের, মিডিয়ার সবাই তো তাদের। তাই তারা একটা মিথ্যেকেও এস্টাবলিশ করে দেদারসে ছেড়ে দেয়। আর বিএনপি জেনুইনটা বলারও প্রয়োজন মনে করেনা বা সেই ফিলিংসই নেই। আর বিএনপি এই আওয়ামী প্রক্সি মিডিয়া লীগের কাছে কৈফিয়ত দিতে দিতেই ক্লান্ত।

আর এসব মিডিয়াকে নিয়ে কিছু বললে সবার আগে এগিয়ে আসে আবার এই বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের কেউ কেউ। কোন মিডিয়া বিএনপির কী কী সর্বনাশ করেছে, করে যাচ্ছে, অবাক হয়ে যাই এ নিয়ে তাদের কোনো স্টাডি বা ভাবনা নেই। এতো বড় দল কোটি কোটি সমর্থক।অথচ তাদের মতাদর্শী কোনো শক্তিশালী মিডিয়া নেই। এখনো যারা বাজারে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সব আওয়ামী ব্যবসায়ীদের মিডিয়া।বিএনপি সব থেকে বেশি চ্যালেঞ্জে পড়বে এই আওয়ামী মিডিয়া কর্তৃক। আসুক ক্ষমতায় মিলিয়ে নিবে এই কথাটি। পদে পদে দোষ ধরে বিএনপির তৃণমূল থেকে ধীরে ধীরে শীর্ষ পর্যন্ত নাস্তানাবুদ করা হবে। ইসরায়েলের প্রক্সি যেমন প্রায় গোটা পশ্চিমা বিশ্ব।  তেমনি আওয়ামী লীগের প্রক্সি ফ্রন্ট লাইনার যোদ্ধা হলো এসব মিডিয়া। এটা যতোদিন বিএনপি না বুঝতে পারবে বা যতোদিন এদিকে নজর না দেবে ততোদিন বিএনপি রাজনীতির মাঠে টেকসই হতে পারবেনা।

লেখক: মাহবুব জামান, ফ্রিলান্সার
amikewna79@gmail.com