মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে ৮৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: নারী নির্যাতন দমন আদালতের এক আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে ভুয়া পেশকার সেজে মো. মোশারফ বিশ্বাস ৮৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আসামির মা খাদিজা বেগম এ বিষয়টি বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারকের নজরে আনেন।
পরে বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস ভুয়া পেশকারকে প্রতারণার অভিযোগে পুলিশে দেন। ঘটনা ঘটেছে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে রোববার দুপুরে। সোমবার পুলিশ তাকে প্রতারণা মামলায় বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে।
জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা খাদিজা বেগমের ছেলের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে প্রতিবেশী নুরু মিয়া তার শিশুকন্যাকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ এনে তার নাবালক ছেলে সজীবের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই মামলা থেকে তার ছেলেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে ভুয়া পেশকার সেজে মো. মোশারফ বিশ্বাস ও রফিক বিশ্বাস নামের দুইজন তার কাছ থেকে ৮৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়; কিন্তু তার ছেলে মামলা থেকে অব্যাহতি পাচ্ছে না। পরে খাজিদার সন্দেহ হয়।
রোববার ছিল ওই মামলার ধার্য তারিখ। ওই দিন খাজিদা বরগুনা নারী ও শিশু আদালতে এ ঘটনা খুলে বলেন। পরে আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস পেশকার পরিচয়দানকারী মো. মোশারফ বিশ্বাসকে ডেকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। বরগুনা থানায় তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ মামলা হয়েছে। সোমবার পুলিশ তাকে বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করেছে।
প্রতারক মো. মোশারফ বিশ্বাসের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া গ্রামে। তার বাবার নাম মো. মোসলেম বিশ্বাস। তিনি আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল এলাকায় বসবাস করেন।
ভুক্তভোগী খাদিজা বেগম বলেন, আমি একজন হতদরিদ্র মানুষ। মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবনধারণ করি। আমার নাবালক ছেলেকে প্রতিবেশী নুর মিয়া তার মেয়েকে দিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে। ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দিবে বলে মোশারফ বিশ্বাস ও তার ভাই রফিক বিশ্বাস পেশকার সেজে আমার কাছ থেকে ৮৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বেশ কয়েক দিন হলেও আমার ছেলের মামলা থেকে অব্যাহতি পাচ্ছে না। এতে আমার সন্দেহ হয়। আমি বিষয়টি বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারককে অবহিত করি। পরে তিনি মোশারফ বিশ্বাসকে ডেকে পুলিশে দিয়েছেন।
রফিক বিশ্বাস বলেন, মোশারফ বিশ্বাস আমার চাচাতো ভাই। তিনি ঢাকায় থাকেন। আমাকে তিনি ঢাকা আদালতের পেশকার বলে পরিচয় দিয়েছেন। খাজিদার কাছ থেকে টাকা আনার সময় তিনি আমাকে নিয়ে গেছেন আমি এর বেশি কিছু জানি না। কিন্তু আমি বুঝতে পারি নাই তিনি একজন প্রতারক।
বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা শিপু বলেন, মোশারফ বিশ্বাস একজন প্রতারক চক্রের সদস্য। এদের কাজ মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। এদের কঠিন শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, নারী ও শিশু আদালতের বিচারক ভুয়া পেশকার পরিচয়দানকারী মো. মোশারফকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
বরগুনা থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ভুয়া পেশকার পরিচয় দেওয়া মোশারফ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।