নাইক্ষ্যংছড়িতে মাইন বিস্ফোরণে ৫ দিনে পা বিচ্ছিন্ন ৪ জনের

প্রথম নিউজ, বান্দরবান: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের অভ্যন্তরে স্থলমাইন বিস্ফোরণে ইউনুছ নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের ডান পায়ের গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীমান্ত পিলার ৩৩-৩৪ এর মাঝামাঝি মিয়ানমারের ‘লাল কাইন্দা’ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। আহত যুবকের নাম ইউনুছ (২৫), যিনি কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা এবং এজাহার হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরিত হলে ইউনুছ গুরুতর আহত হন। সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকা থেকে তার চিৎকার শুনে দুজন বাংলাদেশি যুবক ছুটে গিয়ে উদ্ধার করে তাকে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ জাফর ইকবাল কালবেলাকে জানান, মাইন বিস্ফোরণে একজন রোহিঙ্গা যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত পাঁচ দিনে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে স্থলমাইন বিস্ফোরণে চারজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
গত ২২ জুন বিস্ফোরণে আহত যুবকের নাম নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি এলাকার খুইল্যা মিয়ার ছেলে আরাফাতুল ইসলাম (২৫)। ২৩ জুন বিস্ফোরণে আহত যুবক রাখাইন রাজ্যের মিডাক গ্রামের বাসিন্দা তংচংগ্যা, তিনি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। বিস্ফোরণে তার বাম পা উড়ে যায়। ২৫ জুন বিস্ফোরণে আহত যুবকের নাম ওমর মিয়া (২৫)। তিনি রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাবের মিয়ার ছেলে। ২৬ জুন বিস্ফোরণে পা হারানো রোহিঙ্গা যুবকের নাম ইউনুছ।
এত মাইন বিস্ফোরণ ও আহতের ঘটনা সত্ত্বেও সীমান্তে বন্ধ হয়নি চোরাচালান। স্থানীয়দের মতে, আরাকান আর্মি নির্ধারিত রুট এড়িয়ে বিকল্প রুটে যাতায়াত করতে গিয়ে মাইনের কবলে পড়ছেন চোরাকারবারিরা। এ প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গত পাঁচ দিনে চারজনের পা বিচ্ছিন্ন হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করলে এবং বিজিবি কঠোর অবস্থান নিলে এ ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব।