ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবি বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের

উন্মুক্ত জনসভায় ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে তাবাসসুমের উদ্দেশ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অপেশাদার এবং অশোভন বক্তব্য প্রদান করেন।

ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবি বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের

প্রথম নিউজ, ঢাকা: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন উন্মুক্ত জনসভায় ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে তাবাসসুমের উদ্দেশ্যে অপেশাদার এবং অশোভন বক্তব্যের প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক।

আজ বৃহস্পতিবার সংগঠনের সভাপতি ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং  মহাসচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানা স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলায় সংঘটিত সাম্প্রতিক একটি ঘটনার প্রতি বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। উন্মুক্ত জনসভায় ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে তাবাসসুমের উদ্দেশ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অপেশাদার এবং অশোভন বক্তব্য প্রদান করেন। তার এ অশালীন বক্তব্যে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস উইমেন নেটওয়ার্ক-এর সকল সদস্য সংক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন। কারণ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মচারীগণের সমন্বয়েই সরকারি সকল কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন হয়। সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হয়ে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীবৃন্দ জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন, নির্বাচন ও পরীক্ষা পরিচালনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ উন্নয়নমূলক বহুবিধ কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে, নারী কর্মচারীগণ তাদের দক্ষতা, বিচক্ষণতা, দৃঢ়তা এবং সাহসিকতার সাথে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন।


সরকারি দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে মানহানিকর অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদর্শন করায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের সমন্বয়ে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে এবং সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হবে। মো. রাব্বুল হোসেন একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে যে সকল উক্তি করেছেন তা অশোভন এবং অভদ্রজনোচিত। তাছাড়া তিনি একজন নারীর প্রতি যে ধরনের অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেছেন তা বাঙালি সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতিও চরম অবমাননাকর। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী কর্মচারীর প্রতি ওই জনপ্রতিনিধির এহেন অসংবেদনশীল ও অশোভন আচরণ অগ্রহণযোগ্য এবং নিন্দনীয়।

এরুপ আচরণ ও উক্তি মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের কর্মোদ্দীপনার প্রতিবন্ধকতার কারণ হতে পারে।
এরকম পরিস্থিতি ও আচরণের প্রতি বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক-এর পক্ষ হতে তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে। এরূপ আচরণ একজন দায়িত্বরত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ অনুযায়ী অসদাচরণের শামিল। তার অসদাচরণের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন- বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক এমনটাই প্রত্যাশা করে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে একদিকে মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীগণ তাদের সম্মান ও মনোবল সমুন্নত রেখে পেশাদারিত্বের সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালনে তৎপর থাকবে এবং পাশাপাশি এ জাতীয় নেতিবাচক মনোভাবসম্পন্ন যে কোন ব্যক্তি নারীর প্রতি সংবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল আচরণ করতে সচেতন হবেন।