প্রথম নিউজ, ডেস্ক : (১৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৪২--০৯ মে ২০০৯) "(১৯৭৪ সালের ) নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি দিকে একদিন সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু তাঁর শয়নকক্ষের সামনের লবিতে বসে টেলিভিশনের অনুষ্ঠান দেখছিলেন । শাশুড়ী, হাসিনা ও আমি (ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়া) সেখানে উপস্থিত ছিলাম । এক পর্যায়ে যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের কয়েকজন মধ্যবয়সী ও তরুণ নেতা সেখানে উপস্থিত হন । বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এটাসেটা বিষয়ে কথাবার্তা বলার এক পর্যায়ে তাদের একজন তাঁকে বলেন, " লীডার, আপনি জাতির জনক হয়েও প্রধানমন্ত্রী থাকবেন আর রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পদমর্যাদায় আর এক ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন এটা বেমানান ও দৃষ্টিকটু বলে মনে হয় । সুতরাং আমরা সবিনয়ে আপনার কাছে আবেদন জানাই যে, দেশের সংসদীয় ব্যবস্থার পরিবর্তন করে তদস্থলে রাষ্ট্রপতির শাসন পদ্ধতি প্রবর্তনপূর্বক আপনি দেশে রাষ্ট্রপ্পতির পদে অধিষ্ঠিত হোন । " উপস্থিত অপরাপর নেতারা সমবেতভাবে উক্ত প্রস্তাবের প্রতি জোর সমর্থন ব্যক্ত করেন । "আচ্ছা, ভেবে দেখবো" এই বলে বঙ্গবন্ধু তাদের বিদায় দেন ।
এর সপ্তাহখানেক পর যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের সেই একই নেতারা বঙ্গবন্ধুর কাছে প্রস্তাব করেন, "লীডার, আপনাকে শুধু রাষ্ট্রপতি হলেই চলবে না, পরবর্তীতে সংসদে আমরা আপনাকে আজীবন রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা দিতে চাইবো । " এই প্রস্তাবের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, "রাষ্ট্রীয় কোন পদে কাউকে আজীবনের জন্য নির্বাচিত করা গণতান্ত্রিক বিধিবিধান ও রীতিনীতির সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ । সুতরাং এইটি করা চলবেনা । "
এর দিন পাঁচেক পরের ঘটনা । একদিন সন্ধ্যায় আওয়ামীলীগ ও শ্রমিক লীগের অপর কয়েকজন মধ্যবয়সী ও তরুণ নেতা বঙ্গবন্ধুকে বলেন, "লীডার, আপনি এমন এক ব্যক্তি যে, আপনি জনগণকে যদি ডানদিকে যেতে আহবান জানান তাঁরা তাই করবেন আর যদি তাঁদেরকে বাম দিকে যেতে বলেন তাঁরা তাও করবেন । আপনার প্রতি জনগণের রয়েছে অপরিসীম বিশ্বাস ও আস্থা । "
বঙ্গবন্ধু তাদের কথা গভীর মনোযোগের সঙ্গে শুনলেন বটে কিন্তু তার জবাবে কোনকিছুই বললেন না । "
"বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ " / এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া
মুজতবা খন্দকার : সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক (ফেইসবুক ওয়াল থেকে)
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: