গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে দীর্ঘায়িত করলে মানুষ জেগে উঠবে: মঈন খান

প্রথম নিউজ, অনলাইন: গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে দীর্ঘায়িত করলে দেশের মানুষ আবার জেগে উঠবে বলে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ‘ফিরে দেখা রক্তঝরা জুলাই-আগস্ট-প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। মঈন খান বলেন, গণতন্ত্রের উত্তরণের যে প্রচেষ্টা নিয়ে দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষ এবং রাজনৈতিক দলগুলো যে আন্দোলন করেছে, সেই প্রত্যাশা কি পূরণ হয়েছে? নতুন ‘বন্দোবস্তের’ যে কথা বলা হচ্ছে, তা যেন চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে পরিণত না হয়ে যায়। দীর্ঘ এক বছরে হয়নি। কেন হয়নি? আমরা তো অতীতে উদাহরণ দেখেছি। ৯০ দিনের ব্যবধানে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। আমাদের চোখের সামনে সেই উদাহরণ আছে। তাহলে কি আমরা সেই প্রশ্ন করতে পারি না? দীর্ঘ এক বছরের ব্যবধানে কেন আমরা উত্তরণ করতে পারিনি? আজকে আমাদের জবাবদিহি করারও প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, নতুন বন্দোবস্ত আবার যেন চিরস্থায়ী বন্দোবস্তায় পরিণত না হয়ে যায়। আমরা পরিবর্তন চাই, সব পরিবর্তন কিন্তু পরিবর্তন নয়। ১/১১ এর সময় ঢাকা শহরের প্রত্যেক জায়গায় একটা গোষ্ঠী ব্যানার ফেস্টুন করে ছিল-‘সবকিছু বদলে দাও, পাল্টে দাও’। পৃথিবীর সবকিছু বদলে দেয়া যায় না, পাল্টে দেয়া যায় না, সেটা আমি তখনও বলেছিলাম। পরিবর্তনের কথা বললেও বিভেদ থাকার কথাও মাথায় রাখতে হবে।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বিভেদ কিন্তু আমাদের স্মরণ রাখতে হবে। অন্যথায় আমাদের সেই সকল প্রচেষ্টা ভুলে পরিণত হবে এবং তাই হচ্ছে। সংস্কার, সেই প্রসঙ্গেই বলেছি, সংস্কার কিন্তু সংস্কারের জন্য নয়। কসমেটিক পরিবর্তন দিয়ে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব হবে না। সংবিধানের কিছু বাক্যের যদি আমরা পরিবর্তন করি, সংবিধানের পরিবর্তন কেন, আপনারা যদি পুরো সংবিধান পাল্টেও দেন তাহলে কোনো লাভ হবে না। যারা সংবিধান পরিবর্তন করে, এই দেশের আমরা যারা, মানুষের অন্তরের যদি পরিবর্তন না হয়।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, অতীতে তিন মাসের মধ্যেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন করেছেন, একবছর পরেও কোনো নাগরিক এখনো পর্যন্ত আস্থা রাখতে পারছেন না, কোথায় কোন পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন করতে পারবো কি না। বৈষম্য ছড়িয়ে পড়েছে। দারিদ্র্য বৃদ্ধি পেয়েছে, না খাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। কর্মহীনতা বেড়েছে। বিনিয়োগের পরিস্থিতি একটা নেতিবাচক জায়গায় এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে কেবল একটা ভালো খবর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে। সেখানে কীসের বিনিময়? বাংলাদেশকে কী কী দিতে হবে, এটা আমরা জানি না।
সাইফুল হকের সভাপতিত্বে সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।