পল্লবী এলাকার চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরির নির্দেশ আদালতের

পল্লবী এলাকার চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরির নির্দেশ আদালতের

প্রথম নিউজ, অনলাইন: রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকার চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তালিকাটি আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে আদালতে জমা দেওয়ার জন্য পল্লবী থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালত এ আদেশ দেন।

সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যমে, ‘বিএনপি নেতা বনে গিয়ে পল্লবীতে চাঁদাবাজি শুরু করেছে যুবলীগ নেতা জাকির’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর জেরে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে অভিযুক্ত জাকিরের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি পল্লবী থানা এলাকায় কোনো কোনো ব্যক্তি চাঁদাবাজির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জনজীবন বাধাগ্রস্ত করছে, সুনির্দিষ্টভাবে তাদের বিস্তারিত নাম-ঠিকানা প্রতিবেদনে উল্লেখ করতেও বলা হয়।

আদালতের আদেশে বলা হয়, টিভিতে প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জাকির হোসেন ওরফে শ্যুটার জাকির নামক একজন ব্যক্তি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতা পরিচয়ে তার দলবল নিয়ে পল্লবী থানাধীন টেকেরবাড়ি এবং সাগুফতা এলাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদার দাবিতে ভাঙচুর ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে মারধর করার মত আমলযোগ্য অপরাধে লিপ্ত হয়েছে।  প্রচারিত প্রতিবেদনে তাসকিন নামের এক ব্যক্তি প্রতিবেদকের কাছে তার দেওয়া সাক্ষাৎকারে, শ্যুটার জাকিরের বিরুদ্ধে ধারালো অস্ত্র দ্বারা তার পা কেটে ফেলার চেষ্টা করার অভিযোগ করেন। 

প্রচারিত প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ভুক্তভোগী তাসকিনের একটি পায়ে ব্যাণ্ডেজ এবং তিনি বিছানায় শায়িত। ভুক্তভোগী তাসকিন বলেন যে, ‘আমি ঘরে বিছানায় পরে আছি প্রায় ১৮ থেকে ২০ দিনের মত। চাঁদা চাচ্ছে আমাদের কাছে। যদি আমরা চাঁদার একটা অ্যামাউন্ট দেয় তাহলে হয়ত একটা নেগোশিয়েশনে আসতে পারে।’ 

প্রচারিত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় অত্র আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে যে, পল্লবী থানাধীন টেকেরবাড়ি ও সাগুফতা এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ীগণ চাঁদাবাজের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে তাদের স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছেন, যা একইসঙ্গে মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং একটি আমলযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধ সংঘটনের বিষয়ে অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীগণ তাদের প্রাণ ভয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে অভিযোগ দাখিল করতে বা মামলা করার মতো সাহস পাননি। 

আদেশে আরও বলা হয়, শ্যুটার জাকির ও তার দলের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর অধীন ১৪৩/৩৪/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩৮৫/৩৮৬/৩৮৭ ধারার অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে। বর্ণিত প্রতিবেদন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ (১) সি ধারায় আমলে নেওয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে অত্র আদালতের নজরে এসেছে।  পল্লবী থানা এলাকায় এরূপ কোনো কোনো ব্যক্তি চাঁদাবাজির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জনজীবন বাঁধাগ্রস্ত করে সুনির্দিষ্টভাবে তাদের বিস্তারিত নাম-ঠিকানা, প্রতিবেদনে প্রচারিত ভিকটিমদের বিবৃতি ১৬১ ধারামতে লিপিবদ্ধ করে বিস্তারিত প্রতিবেদন সাত কার্যদিবসের মধ্যে অত্র আদালতে পাঠানের জন্য পল্লবী থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হল।