সিলেটে আড়াই শতাধিক নেতাকর্মীর নামে ২ মামলা

বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগ নেতা ইমন আহমদ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

সিলেটে আড়াই শতাধিক নেতাকর্মীর নামে ২ মামলা

প্রথম নিউজ, সিলেট: সিলেটে যুবদলের ডাকা হরতাল চলাকালে ছাত্রদল ও শিবিরের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় দু’টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, ছাত্রদল ও জামায়াত-শিবিরের আড়াই শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগ নেতা ইমন আহমদ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কল্লোল বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেন। ছাত্রলীগ নেতার মামলায় এজাহারনামীয় ১৪ জন এবং অজ্ঞাত ৫০-৫৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন- সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি, সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি আহসান, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল ও সদস্য সচিব শাকিল মোর্শেদ, মহানগর বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব মিফতা সিদ্দিকী, জেলা বিএনপি’র সদস্য মাহবুবুল হক চৌধুরী, মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক আফছর খান, বিএনপি’র মোমিনুল হক, সাবেক ছাত্রদল নেতা মকসুদ আহমদ। জামায়াত-শিবিরের ফখরুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, ওলিউর রহমান ও জয়নাল আবেদীন। এ ছাড়া পুলিশের দায়ের করা মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৭০-১৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন- মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি আহসান, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার, ছাত্রদল নেতা আব্দুস সালাম টিটু, উবায়েদ, ওলিউর রহমান ঝুনু, সাবেক ছাত্রদল নেতা আরাফাত চৌধুরী জাকি, তারেক, শাকিল মুর্শেদ, জামায়াত-শিবিরের আফজাল আহমেদ, সুজাত আহমদ, রায়হান, আবিব, নাছির ও শিব্বির আহমদ। বিএনপি-জামায়াতের ডাকা টানা অবরোধের দ্বিতীয় দিন বুধবার যুবদলের হরতাল চলাকালে সকালে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বন্দরবাজারের জেলরোড এলাকা থেকে মহাজনপট্টি হয়ে করিম উল্লাহ মার্কেট এলাকায় একটি মিছিল বের করেন। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে।

একপর্যায়ে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরে করিম উল্লাহ মার্কেটের উল্টো গলি থেকে বিশাল মিছিল বের করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। মিছিল নিয়ে তারা স্থানীয় করিম উল্লাহ মার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। একই স্থানে ছাত্রদল আগে থেকেই অবস্থানে ছিল। সে সময় করিম উল্লাহ মার্কেটের সামনের সড়ক দিয়ে ছাত্রলীগের তেলিহাওর গ্রুপের এমদাদ-সুজেল ও জাওয়াদের নেতৃত্বে হরতালবিরোধী মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রদল ও শিবির তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় জেলা ছাত্রলীগ নেতা এম আর মুহিবসহ কয়েকজনকে বেধড়ক পিটিয়ে ও ইট পাটকেল ছুড়ে আহত করা হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা পাল্টা ধাওয়া করে শিবির ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের প্রতিহত করে মাঠ দখলে নেন। এদিকে অবরোধের তিন দিনে সিলেটে বিএনপি-জামায়াতের ১২ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ (পিপিএম) জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সিলেটে এই ৩ দিন কোনো ধরনের বড় ঘটনা ঘটেনি। অবরোধের নামে নাশকতার অভিযোগে বৃহস্পতিবার ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ সুরমায় ১, শাহপরান এলাকায় ২ ও জালালাবাদ থানা এলাকায় ১ জন। এর আগে বুধবার বন্দরবাজার এলাকা থেকে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তার আগের দিন দক্ষিণ সুরমায় আটক করা হয় আরও দুজনকে। তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।