বুধবার পর্দা উঠছে বাণিজ্য মেলার

বুধবার পর্দা উঠছে বাণিজ্য মেলার

প্রথম নিউজ, অনলাইন:  বুধবার (১ জানুয়ারি) পর্দা উঠতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার। এ কারণে মেলা প্রাঙ্গণ বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। তবে এবারের বাণিজ্য মেলার আরেকটা বাধা হতে পারে এশিয়ান বাইপাস সড়কের অসমাপ্ত নির্মাণ কাজ। এ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিনিয়ত যানজটের আশঙ্কা করছেন মেলা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা। 

এদিকে, স্টলগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের গোছানোর কাজ। প্রায় ৮০ ভাগ স্টলের কাজ শেষ পর্যায়ে। দেশের চলমান রাজনীতির কারণে অনেকেই এবারের মেলা হওয়া নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন। সব শঙ্কা কাটিয়ে অবশেষে জাঁকজমকপূর্ণভাবে মেলা হতে যাচ্ছে। 

বুধবার রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরে স্থায়ী ভেন্যু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিউশন সেন্টারে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসর। শেষ মুহূর্তে নির্দষ্টি সময়ে স্টল নির্মাণ সম্পন্ন করতে সকাল থেকে রাত অবধি কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন স্টল তৈরির কারিগররা। মেলাকে প্রাণবন্ত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ চষ্টো চালিয়ে যাচ্ছে মেলার আয়োজক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

মেলায় যে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৭ শতাধিক পুলিশ। থাকবেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের একাধিক টিম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি গেট ইজারাদারদের পক্ষ থেকে থাকবে স্বেচ্ছাবেক দল।  

১ জানুয়ারি সকাল ১০টায় প্রধান উপদষ্টো ড. মুহাম্মদ ইউনূস আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা উদ্বোধন করবেন। এবার মেলার প্রধান প্রবেশদ্বার ‘৩৬ জুলাই’-এর স্মৃতির আদলে তৈরি করা হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে থাকছে ৩৬২টি স্টল। বিদেশিদের স্টলও রাখা হয়েছে। মেলার প্রধান প্রবেশদ্বারে পূর্ব পাশে ‘৩৬ জুলাই’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদের প্রতি সম্মান রেখে তৈরি করা হয়েছে শহিদ আবু সাঈদ কর্নার ও মূল ভবনের উত্তর পাশে থাকছে মুগ্ধ কর্নার। মূল ভবনের ভেতরে থাকছে ইয়ুথ প্যাভিলিয়ান। 

দর্শনার্থীদের বসার জন্য থাকবে ৩টি সিটিং জোন। ব্যাংকিং লেনদেনের জন্য থাকতে ডাচ-বাংলা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের একাধিক বুথ। শিশুদের জন্য থাকছে  ডিজিটাল শিশু পার্ক। মেলায় যাতে কোনো প্রকার সমস্যা সৃষ্টি না হয় সেজন্য ২৩৪টি সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি থাকছে ৫টি ওয়াচ টাওয়ার। রাজধানীসহ আশপাশের জেলার লোকজন যেন নির্বিঘ্নে মেলায় আসতে পারেন সেজন্য অন্য বছরের মতো থাকবে বিআরটিসি বাস সার্ভিস। 

সরেজমিন দেখা গেছে, বর্ণিল সাজে সাজছে যমুনা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান যমুনা প্যাভিলিয়ান। সুমন এন্টারপ্রাইজের কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম শান্ত বলেন, আমাদের স্টলের কার্যক্রম শেষ। আমরা মালামাল সাজাচ্ছি। আশা করছি এবার বেচাকেনা খুব ভালো হবে। বিএমটিএফের প্রকেৌশলী আলমাস হোসেন বলেন, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুটো প্যাভিলিয়নের কাজ শেষ করেছি। 


সিএনজি অটোরিকশা চালক নুরুল আমিন বলেন, ‘মেলা আইলে আমরা দু-চারটা টেকা বেশি কামাইবার পারি। তয় জ্যাম আমাগো দিন শেষ কইরা দেয়’। 

গেট ইজারাদার (হেড অব অপারেশন) এসএম আমিনুল ইসলাম বলেন, এবারের মেলায় প্রবেশ করতে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট কিনতে পারবেন দর্শনার্থীরা। 

ট্রাফিক ইনচার্জ রাজিব বাহাদুর বলেন, যানজট এড়ানোর জন্য অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। যানবাহনের বেশি চাপ থাকলে টোল ফ্রি থাকবে এমন পরিকল্পনা রয়েছে।  

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঠে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থাকবেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) নারায়ণগঞ্জেন মেহেদী ইসলাম বলেন, পুলিশের পাশাপশি সার্বক্ষণিক টহলে থাকবেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তাত্ক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে থাকবে একটি পুলিশ ক্যাম্প।