‘এদের শেকড় অনেক গভীরে’, সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে উমামা

‘এদের শেকড় অনেক গভীরে’, সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে উমামা

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: রাজধানীর গুলশানে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।

পোস্টে উমামা ফাতেমা লেখেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫ জনের চাঁদাবাজির খবর শুনে আমার পরিচিত ব্যক্তিবর্গ এতটাই আশ্চর্যান্বিত হওয়ার অভিনয় করছেন যে আমার মনে হচ্ছে আমিই সব থেকে কম আশ্চর্য হয়েছি। এই ছেলেগুলোকে তো নেতাদের পেছনে প্রটোকল দিতে দেখা গেছে এত দিন যাবৎ। সচিবালয় থেকে শুরু করে মিছিল-মিটিং, মারামারি সব জায়গাতেই সমন্বয়কদের ডান হাত, বাম হাত হিসেবে নির্বিঘ্নে প্রটোকল দিয়ে গেছে। গুলশান বনানী গ্যাং কালচারের অজস্র অভিযোগ অভ্যন্তরীণভাবে তাদের বিরুদ্ধে ছিল।’
উমামা আরও বলেন, ‘এই ছবির রিয়াদ নামের ছেলেটা গত ডিসেম্বর মাসে রূপায়ণ টাওয়ারে আমার সামনে অত্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছিল। আমরা মেয়েরা তাকে থামানোর চেষ্টা করলে আমাদের ওপর পাল্টা চড়াও হয়। ওই ঘটনার পর ছেলেটার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে হুমকি, মারামারি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে। আমি জেনে তখন মোটেও অবাক হইনি, কারণ তত দিনে বৈষম্যবিরোধীতে এই ধরনের মানুষজনের আনাগোনাই সর্বোচ্চ টের পাওয়া যেত। ঠিকই তারা রূপায়ণ টাওয়ারে অবাধে আসা যাওয়া করত। কারও দুর্নীতি বা অসততার ব্যাপারে অভিযোগ জানালে উত্তরে পিনড্রপ সাইলেন্স উপহার পেতে হবে। আর আমি চোখের সামনে দেখতাম এসব লোকজনই কীভাবে দিন শেষে এক্সেস করে নেয়। আজকে এত মাস পর এই প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালে বলার ভাষা পাই না কোনো?! যে যেভাবে পারছে এই প্ল্যাটফর্মকে নষ্ট করেছে।’
চাঁদাবাজির ঘটনায় সবাই অবাক হওয়ার ভান করছে মন্তব্য করে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘আজকের এই চাঁদাবাজির খবর দেখে আশপাশের সবাই এত অবাক হওয়ার ভান করছেন বিষয়টা কিছুটা হাস্যকর বটে।
উমামা আরও বলেন, ‘ইশ! মানুষ কত নিষ্পাপ! সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো তারা আবিষ্কার করেছেন এই ছেলেগুলো আজ কীভাবে চাঁদাবাজি করল?! অত্যন্ত দুঃখিত বন্ধুরা, বলতে হবে এই প্রথম কোনো চাঁদাবাজি করতে গিয়ে তারা পুলিশের হাতে ধরা খেল। ঠিকমতো খোঁজ নিলে বুঝবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে।’
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আটকরা হলেন— বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহীম হোসেন মুন্না (২৪), সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম (২২), সাদমান সাদাব (২১), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাড্ডা থানার সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম (১৩) ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান (রিয়াদ)।
‎এই ঘটনার পরে গতকাল রাতে নিজ নিজ সংগঠন থেকে আটক পাঁচজনের মধ্য থেকে চারজনকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সাংগঠনিক নীতিমালা ও শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদাবকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো।’