সরকার হটানোর আন্দোলনে ‘রাস্তায় নামা’র প্রস্তুতি নিন: ড. মোশাররফ
কোনো আন্দোলনে জনগণ প্রথম নামে না। নেতৃত্বকে নামতে হয়।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকার হটানোর আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের ‘রাস্তায় নামা’র প্রস্তুতি নিতে বললেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই আহবান জানান। সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ’৯০ এর ডাকুস ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’র উদ্যোগে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদ নুর হোসেন ৩৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ‘র কাছে স্বৈরাচার বিরোধী মিছিল চলাকালে জিরো পয়েন্টের কাছে পুলিশ গুলিতে নিহত হয় নুর হোসেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, কোনো আন্দোলনে জনগণ প্রথম নামে না। নেতৃত্বকে নামতে হয়। সকল আন্দোলনে অতীতের প্রমাণ হচ্ছে যে, ছাত্র-যুব-শ্রমিক তারা ভ্যানগার্ড হিসেবে সামনে থাকে, তারপরে রাজনৈতিক দলগুলো থাকে, তারপরে জনগন নামে। সেই দিন কোনো স্বৈরাচার কোনো ফ্যাসিস্ট পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায় তারা টিকতে পারেনি। পাকিস্তানের সময় আইয়ুব খান টিকে নাই, বাংলাদেশে হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদও টিকে নাই। শ্লোগানের চেয়ে রাস্তায় নামার জন্য আমাদেরকে তৈরি হতে হবে। সরকার তাদের নিজেদের ভারে নিজেরা ন্যুজ। অতএব সময় সামনে বেশি দূরে নয় যখন জনগনকে নিয়ে একটি ধাক্কা দেয়ার প্রয়োজন। সেই ধাক্কা দেয়ার জন্য, রাস্তায় নামার জন্য আমি আপনাদের সকলকে প্রস্তুতি গ্রহন করার আহবান জানাচ্ছি।
নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে গণতন্ত্রের বিজয়ের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে যারা হটিয়ে তারা এই টেবিলের বীরেরা। আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, আমাদের কৌশল আছে-সবই ঠিক আছে।আমাদের সকলকে সেই ঐক্য সেই কমিটমেন্ট নিতে হবে। অবশ্যই আমরা রাস্তা একদিন না একদিনে এদেশের জনগন নামবে। সেই দিন বেশি আমার মনে হয় দূরে নয়।
তিনি বলেন, আজকে অনেকে বলেন, আমরা দাবি করব যে, আগামী নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে।এটা শেখ হাসিনা কখনো দেবে, এটা কেউ বিশ্বাসও করে না। অতত্রব এই সরকারকে হটানোর জন্য আমাদের কাছে আন্দোলনের বিকল্প আর কিছু নাই। এটা সকলেই বলেছেন, আমরা সকলে বলেছি। তাহলে আন্দোলনটা কী অবস্থায় আছে ? সরকার তো ফ্যাসিবাদী কায়দায় এই আন্দোলনকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করবে। আমাদেরও ঠিক একইভাবে সাহস, ধরয্য এবং কমিটমেন্ট নিয়ে আমরা যে যে অবস্থানে আছি, সেই অবস্থানে থেকে আগামী দিনে আমাদের দেশকে রক্ষা করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এটা বিএনপির বিষয় নয়, জনগনের স্বার্থ রক্ষার করার জন্য আমাদের এক হতে হবে এবং জনগনের ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
খন্দকার মোশাররফ দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, এই সরকারের হাত থেকে জনগন মুক্তি চায়। এই সরকার ফ্যাসিজম চালু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত যে পরিমান জনগনকে নিপীড়ন-নির্যাতন, লুটতরাজ-চাঁদাবাজি করছে তাদের মানুষ অতিষ্ঠ, দ্রব্যমূল্যে মানুষ অতিষ্ঠ। আইনের শাসন নেই, দেশে বিচার ব্যবস্থা নাই। একটাই সমাধান এই সরকারের জাত থেকে জনগণকে রক্ষা করা। আর তার রক্ষা করতে পারলেই এই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে।
৯০‘র ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্র নেতা ফজলুল হক মিলনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তা্ফিজুর রহমান বাবুল, খন্দকার লুতফর রহমান, আসাদুর রহমান খান আসাদ, সাইফুদ্দিন মনি, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান শিমুল, আকরামুল হাসান, ছাত্র দলের ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: