থানার সামনের পুকুরে সিজুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়

প্রথম নিউজ, গাইবান্ধা: সাঘাটা থানার সামনের পুকুরে সিজুকে পিটিয়ে হত্যার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এতে সিজু হত্যার রহস্যের জট খুলতে শুরু হয়েছে। এঘটনায় গাইবান্ধার সাঘাটায় পুকুর থেকে সিজু মিয়া (২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ সিজুকে হত্যা করে পুকুরে ফেলা রাখার অভিযোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। হত্যার বিচারের দাবিতে রোববার সকালে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা। সচেতন নাগরিকের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাঘাটা ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক এনামুল হক সরকার, সাঘাটা উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক ইফতিয়ার আহমেদ সুজন, উপজেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাজেদুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন সাঘাটা উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মনিরুজ্জামান, অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গোলাম রব্বানী। সাঘাটা উপজেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাজেদুর রহমান জানান, সিজুকে পুলিশ থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন।
থানা থেকে পালানোর সময় পুকুরে ঝাপ দিয়ে তিনি মারা যান নাই। তার বাড়ি নদীর উপর তিনি সাঁতার জানে। এই হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্য বিচার ও সাঘাটা থানার ওসিকে অব্যাহতি না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে নিহত সিজু মিয়ার মা রিক্তা বেগম জানান, কয়েকদিন আগে সিজু মিয়া একটি পুরাতন অ্যান্ড্রয়েড ফোন ক্রয় করেছিলেন। সিজু মিয়ার মা রিক্তা বেগম দাবি করেন, কয়েকদিন আগে সিজু মিয়া একটি পুরাতন অ্যান্ড্রয়েড ফোন ক্রয় করেছিলেন। সাঘাটা থানা থেকে ফোনটি চোরাই বলে জানায় এসআই রাকিব। পরে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলীর উপস্থিতিতে ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার ফোনটি পুলিশকে দিয়ে দেন। তারপরও সাঘাটা থেকে পুলিশ পরিচয়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে সিজুকে সাঘাটা থানায় দেখা করতে বলেন। তিনি আরও দাবি করেন, তার ছেলেকে পুলিশ হত্যা করে পুকুরে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার নাটক করে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়েছে। সকালে পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাটিও নাটক ছিল পুলিশের। তিনি তার ছেলের হত্যার বিচার দাবি করেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, এ হত্যা নি:সন্দেহে পুলিশ করছেন। তার প্রমান একটি মানুষের শরীর ১২ ঘন্টা পানি নিচে ছিল। তার পকেট থেকে গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একটি স্পৃষ্ট প্রবেশপত্র কিভাবে এলো।
পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর তার পকেট থেকে বের করল , সেটি একটু ভিজলো না। এই হত্যার সঠিক বিচার দাবি করছি। স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, এ হত্যা নি:সন্দেহে পুলিশ করছেন। তার প্রমান একটি মানুষের শরীর ১২ ঘন্টা পানি নিচে ছিল। তার পকেট থেকে গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একটি স্পৃষ্ট প্রবেশপত্র কিভাবে এলো। পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর তার পকেট থেকে বের করল , সেটি একটু ভিজলো না। এই হত্যার সঠিক বিচার দাবি করছি। গাইবান্ধা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ফেরদাউস সরকার রুম্মান বলেন, ‘সিজু অত্যন্ত নম্র ও ভদ্র প্রকৃতির ছেলে। তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যার ভিডিও আমাদের কাছে আছে। আমরা এ হত্যার বিচার দাবি করছি। সিজু মিয়া সদর উপজেলার ছাত্র শিবির কর্মী ও গিদারী ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ছিলেন। গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম জানান এই ঘটনাটি সুষ্ট তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধীকে কোন ভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। নিহত সিজু মিয়া (৩০) গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে এবং ইউনিয়ন ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিলেন।
উল্লেখ্য: পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় ঢুকে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে পুকুরে ঝাঁপ দেয় সিজু মিয়া। পরদিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাঘাটা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের পুকুরের কচুরিপানার মধ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অজ্ঞাতনামা হিসেবে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। পরের দিন শনিবার পুকুরে সিজুকে পুলিশ কতৃক পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় তোলপার সৃষ্টি হয়। পরে সেই দিনই গাইবান্ধা পুলিস সুপারের কর্যালয় ঘেরাও করে এলাকাবাসি।