স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে দেশের জনগণ গণতন্ত্রসহ সব অর্জনকে হারিয়েছে: বিএনপি
মহান বিজয় দিবসের দিন দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুস্পমাল্য অর্পনের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে দেশের জনগণ গণতন্ত্রসহ সব অর্জনকে হারিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতি্বার মহান বিজয় দিবসের দিন দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুস্পমাল্য অর্পনের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে আমরা কিছুই পাইনি, বরঞ্চ হারিয়েছি। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা যে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলাম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সেই গণতন্ত্র আমরা হারিয়েছি। আমাদের সবচেয়ে দূর্ভাগ্য হচ্ছে, একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে একটা ব্যবস্থা করা হয়েছিলো সেটাও তারা বাতিল করে দিয়েছে। এখানে এখন নির্বাচন ব্যবস্থা নেই যে নির্বাচন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে, ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। দেশের মানুষ এখন ভোট দিতে পারে না। এখানে দারিদ্র আরো বেড়েছে, মানুষ গরীব থেকে গরীব হয়েছে। একটা শ্রেনীর মানুষ যারা আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট তারা ধনী হয়েছে।”
পঞ্চাশ বছরের বড় লজ্জার হিসেবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানে(র্যাব) বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি যে, এটা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় লজ্জা। এই পঞ্চাশ বছর পরে আমাদের একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা পেতে হচ্ছে এবং আমরা গণতন্ত্রের বাইরের একটি রাষ্ট্র সেটাকে আজকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। যেটা আমাদের জন্য লজ্জা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকে যারা ক্ষমতা দখল করে বসে আছে তাদের কারণেই এই অবস্থা বাংলাদেশের আজকে হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মুক্তিযুদ্ধে ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পস্তবক অপর্ণ করে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আজকে ৫০ বছর পরেও আমরা যে একটা স্বাধীন ও মুক্ত বাংলাদেশের যুদ্ধ করেছিলাম, লড়াই করেছিলাম সেই স্বাধীন ও মুক্ত বাংলাদেশ আমরা এখন দেখছি না। আমরা দেখছি যে একটা কর্তৃত্ববাদী সরকার, ফ্যাসীবাদী সরকার তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে এখানে একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রবর্তন করার জন্য কাজ করছে।”
‘‘ আজকে আমরা এখানে শপথ নিয়েছে যে, এদেশে সমস্ত জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে, সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা জনগনের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে এখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং একটা মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো ইনশাল্লাহ।”
সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে পুস্পমাল্য অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়া্উর রহমানের মাজারে পুম্পমাল্য অর্পন করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিএনপি মহাসচিব।
এ সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, কেন্দ্রীয় নেতা মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মীর সরফত আলী সপু, ডা. রফিকুল ইসলাম, শামীমুর রহমান শামীম, সেলিমুজ্জামান সেলিম, নাজিম উদ্দিন আলম, ইশরাক হোসেন, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, অঙ্গসংগঠনের মহানগর বিএনপির আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, যুব দলের সাইফুল ইসলাম নিরব, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, জেবা খান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, জাসাসের হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, উলামা দলের শাহ নেসারুল হক, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ড্যাবের ডা. আবদুস সালামসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: