প্রথম নিউজ, অনলাইন: জনগণকে বাদ দিয়ে, ভোটারদেরকে বাদ দিয়ে এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকার পেছনে সাবেক আইজি বেনজীর আহমদের মতো অফিসাররা যে ভূমিকা রেখেছেন শেখ হাসিনা কি ভুলে যাবেন তাদের অবদান এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, 'সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের আরব্য উপন্যাসের মত যে ঘটনাগুলো আমরা প্রতিদিন শুনছি এই ঘটনাগুলো কি জানতো না সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো? নিশ্চয়ই জানত কিন্তু তারা করেনি। আন্তর্জাতিক চাপ এবং কথাবার্তা এমন হচ্ছে যার কারনে এখন তার ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করেছে। আমি আপনাদের বলি এগুলো কিছুই হবে না একটা আইওয়াশ করছে সরকার। এদেরকে ঠিকই প্রটেকশন দিবে সরকার, কারণ এই বেনজির সাহেব পুলিশের আইজি-র্যাবের ডিজি থাকা অবস্থায় যত বিরোধীদলের নেতাকর্মী-বিরোধী মতের নেতাকর্মী যত বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে অসংখ্য মানবতাবিরোধী কাজ তাকে দিয়ে বাস্তবায়ন করানো হয়েছে। শেখ হাসিনা কি ভুলে যাবেন তার অবদান?
রিজভী বলেন, 'জনগণকে বাদ দিয়ে ভোটারদেরকে বাদ দিয়ে এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকার পেছনে এই সমস্ত কর্মকর্তারা যে ভূমিকা গুলো রেখেছেন যে অমানবিক রক্তাক্ত ভূমিকা রেখেছেন শেখ হাসিনা আজকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছেন তার জন্য দায়ি এই সমস্ত অফিসাররা। তাদেরকে ভুলবেন কি করে তিনি। এখন আইওয়াশ করছেন দেখবেন যে কিছুই হবে না। দেখবেন কিছুদিন পর আরেকটি ঘটনা ঘটিয়ে সেদিকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিবেন।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স (এ্যাব) ঢাকা সেন্টার আয়োজিত লুটপাট অব্যবস্থাপনা ও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে যাত্রাপথে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ভয়াবহতা ও জনদুর্ভোগ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, '২০১৮ সালের মিডনাইট নির্বাচনের টোটাল আর্কিটেকচার হচ্ছেন সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান। আমরা এর আগে কখনো দেশের কোন সেনাবাহিনীর প্রধানকে কোন রাজনৈতিক বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে শুনিনি। ওই নির্বাচনের পরে তিনি বলে দিলেন স্বাধীনতার পরে এত সুষ্ঠু নির্বাচন এই দেশে আর হয়নি অর্থাৎ শেখ হাসিনার পক্ষে তার একচেটিয়া একতরফা অবৈধ নির্বাচন জোর করে ক্ষমতায় থাকার সমস্ত প্রোটেকশন দিয়েছেন এই ব্যক্তি সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান।
রিজভী বলেন, 'সরকারের একাউন্টাবিলিটি নেই বলে কোন কিছুর জন্যই ব্যবস্থা নিতে পারেনা। যে সবচেয়ে বড় দুর্বৃত্ত সে এখন শ্রমিক লীগের নেতা। যারা সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিবাজ এবং দুর্বৃত্ত তারা এখন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা। বেআইনি অর্থের সাথে বেআইনি ব্যক্তির মিশ্রণ ঘটে খুব দ্রুত এবং আমরা তারই পরিণাম দেখতে পাচ্ছি। এই যে আনোয়ারুল আজিম আনারের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলে ফেললেন দেখুন তিনি এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। আপনার এলাকার যদি কোন মাফিয়া সেই এলাকায় কিছু হতে চায় আর সেখানে যদি সরকার তাকে নিরাপত্তা দেয় তাহলে কোন ভদ্রলোক এমপি ক্যান্ডিডেট হতে পারবেনা এটাই হচ্ছে সত্য কথা।
তিনি বলেন, 'আগে তো তার কখনো কোনদিন নাম শুনিনি এই ঘটনা হওয়ার পর জানতে পারলাম তিনি একজন ভয়ংকর রকমের মাফিয়া ব্যক্তি ছিলেন সেখানকার। সেরকম একজন ব্যক্তি আবার একটি দলের নমিনেশন পাচ্ছেন তাও একবার না তিনবার। এই ধরনের ব্যক্তিরা কি করে এমপি হলেন এটা একটা সবচেয়ে বড় ঘটনা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, 'এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের পরে তদন্ত হওয়ার আগেই কি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে দিলেন এখানে ভারতের কোন ইনভলভমেন্ট নাই। সুতরাং এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কনফিউশন সৃষ্টি হচ্ছে। সে যে টাইপের লোক হোক না কেন তার অতীত পরিচয়ে তারপরেও অবৈধ সরকারের ডামি নির্বাচনের সংসদ সদস্যের একটা শিল আছে তার। তার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যাকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে এই ধরনের লোকেরা ভারতে আশ্রয় পান কি করে?
তিনি বলেন, 'আমরা শুনতে পাই বাংলাদেশের নাকি শীর্ষ সন্ত্রাসীরা বিভিন্নভাবে ভারতে আশ্রয় নিয়ে থাকেন। তারা সেইখান থেকে বাংলাদেশে চাঁদাবাজি, খুন সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত রয়েছে এটা আমার কথা না বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে আসছে। এদের মধ্য থেকে আবার কোনদিন হয়তো কেউ কেউ এদেশের এমপি হয়ে যাবেন যদি এই কর্তৃত্ববাদী শাসক থাকে যদি এই একনায়কোচিত শাসন থাকে। যদি এই ডামি নির্বাচনের মিডনাইট সরকার ক্ষমতায় থাকে এরা নানাভাবে ম্যানেজ করে দেশে এসে এমপি হয়ে যেতে পারে।
রিজভী আরও বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তিনি বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি করতে দেননি বলে ষড়যন্ত্র করছে। আপনি যাদেরকে বলছেন তারা তো বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছেন। তাহলে আপনি কেনো বলেছেন "আমি ভারতকে যা দিয়েছি তারা কোনোদিন ভুলবেনা"। এটা তো আপনার নিজের মুখের কথা। আজকে যে দুর্নীতির ওপর আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিষ্ঠিত তার সঙ্গে তো মাফিয়াদের সম্পৃক্ততা থাকবেই।
সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় এ্যাবে সভাপতি ও বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ, প্রকৌশলী মো: মাহবুব আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।