মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু কাল, বিদেশ থেকেও প্রার্থী হওয়া যাবে

গতকাল বাফুফে ভবনে এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।

মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু কাল, বিদেশ থেকেও প্রার্থী হওয়া যাবে

প্রথম নিউজ, খেলা ডেস্ক: আগামী ২৬শে অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-এর নির্বাচন। গতকাল বাফুফে ভবনে এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। এ সময় কমিটির অন্য দুই সদস্য মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব  সুরাইয়া আখতার জাহান  ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু হবে ৯ অক্টোবর, চলবে তিন দিন (৯, ১০ ও ১২ই অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।

সভাপতি পদে মনোনয়ন ফরমের মূল্য ১ লাখ টাকা, সিনিয়র সহসভাপতি পদে ৭৫ হাজার, সহসভাপতি পদে ৫০ হাজার এবং সাধারণ সদস্য পদের মনোনয়ন ফরম ২৫ হাজার টাকা। মনোনয়ন পত্র যাচাই বাচাই হবে ১৬ অক্টোবর।  মনোনয়নপত্রের ওপর আপত্তি থাকলে ৫০ হাজার টাকা ফি দিয়ে ১৭ অক্টোবর আপিল করার সুযোগ রয়েছে। পরদিন হবে শুনানি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ১৯ থেকে ২০শে অক্টোবর দুপুর ২টা পর্যন্ত। ২০শে অক্টোবর বিকালে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও ব্যালট নির্ধারণ করবে। বিদেশ থেকেও প্রার্থী হওয়া যাবে বাফুফে নির্বাচনে।  

বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটিতে মোট পদ ২০টি। সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, সহসভাপতির তিনটি পদের পাশাপাশি নির্বাহী কমিটির সদস্যপদের সংখ্যা ১৫। বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দীন আগেই জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে তিনি সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। তবে তার প্যানেল থেকে অনেকেই নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। যার মধ্যে আছেন দুই সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ ও আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক। একই পদে এরা দু’জন বিদেশ থেকেই নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। এরই মধ্যে সভাপতি পদে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন তাবিথ আউয়াল ও তরফদার রুহুল আমিন। ইতিমধ্যে নির্বাচনের কাউন্সিল বা ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে।

কাউন্সিলর হতে মোট ১৩৭টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ১৩৩টি আবেদনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১৩৩ কাউন্সিলরের মধ্যে আছে ৮ বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, ৫৮ জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, প্রিমিয়ার লীগের ১০ ক্লাব, বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লীগের ৫ ক্লাব, প্রথম বিভাগের ১৮ ক্লাব, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের ৮টি করে ক্লাব, নারী লিগের ৪ শীর্ষ দল, ৬ বিশ্ববিদ্যালয় ও ৫ শিক্ষা বোর্ড। এ ছাড়া রেফারি, কোচেস অ্যাসোসিয়েশন এবং মহিলা ক্রীড়া সংস্থার ভোট একটি করে। গতকাল  তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী বিধিমালা নিয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন মেজবাউদ্দিন। সেখানে উঠে আসে বিদেশ থেকে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি।

এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘একজন বিদেশ থেকে পাঠালেন তার স্বাক্ষর আমরা যাচাই করব কিভাবে।’ মনোনয়ন পত্র গ্রহণ করে অনলাইনে স্বাক্ষর করে বা সেই ফরম বিদেশ থেকেই কারো মাধ্যমে স্বাক্ষর করে পাঠানোর সুযোগ থাকতে পারে। এই প্রশ্নের উত্তরে আবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘যদি এটি সেই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে ভেরিফাই হয়ে আসে তখন দেখা যেতে পারে।’ প্রধান নির্বাচন কমিশনার অবশ্য বিদেশ থেকে প্রার্থী হওয়াকে নিরুৎসাহিত করে বলেন, ‘বিদেশ থেকে প্রার্থী হওয়া সঠিক রাস্তা নয়। এটা লিগ্যালি পারমিট করে না।’ মনোনয়ন পত্রের ওপর আপত্তির সুযোগ রয়েছে। বিদেশ থেকে কেউ মনোনয়ন পত্র প্রেরণ করলে সেটি আপত্তি হলে শুনানির সময় অভিযুক্তকে সশরীরে থাকতে হবে। সশরীরে না থাকতে পারলে প্রার্থীতা থাকবে না সেটা স্পষ্ট করে তিনি বলেন, ‘শুনানির সময় সশরীরে প্রার্থীকে হাজির হতে হবে।

সশরীরে হাজির না থাকলে প্রার্থীতা থাকবে না।’ বাফুফের নির্বাচনে কাউন্সিলরশিপ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। যারা কাউন্সিলর হতে পারেননি বাফুফের কাছে সুষ্ঠু বিচার না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। আদালতের নির্দেশনা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের সদস্য ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান বলেন, ‘ভোটার তালিকার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্বাহী কমিটির এখতিয়ার। মহামান্য আদালতের কোনো নির্দেশনা থাকলে ভোটার সংক্রান্ত সেটা নির্বাহী কমিটিই দেখবে।’ বাফুফের কাউন্সিলর তালিকায় হত্যা মামলার আসামী রয়েছেন। এ নিয়ে ফুটবলাঙ্গনে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। মামলার আসামীদের নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোট প্রদানে অবশ্য আইনত কোনো বাধা নেই স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত শাস্তি প্রদান না করে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রার্থী হতে সমস্যা নেই। মামলা, এমনকি জেল খাটলেও নির্বাচন করতে বাধা নেই। আদালত দোষী সাব্যস্ত করলেই কেবল নির্বাচনে অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।’