পশ্চিমবঙ্গে ‘নেতা-মন্ত্রী এই পাড়ায় ঢোকা নিষেধ’ হুঁশিয়ারি এলাকাবাসীর
বিজেপির ফাঁদে পড়ে গ্রামবাসীর কয়েকজন এমন দেয়াল লিখেছেন। তাতে অবশ্য বিজেপি হালে পানি পাবে না।

প্রথম নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে দেয়ালে লিখে হুঁশিয়ারি বার্তা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের পুরাতন মালদহ ব্লকের মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁসিপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এই গ্রামেও দিদির দূতরা আসবেন- এই খবর চাউর হতেই পাঁসিপাড়ায় শুরু হয় দেওয়াল লিখন। লেখা হয়- ‘নেতা-মন্ত্রী এই পাড়ায় প্রবেশ নিষেধ।’
আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- গ্রামবাসীর অভিযোগ, তাদের এলাকার রাস্তা যাতায়াতের উপযুক্ত নয়। রাস্তা মেরামতের দাবিতে একাধিকবার তারা বিক্ষোভ করেছেন। পথ অবরোধও করেছেন। প্রতিশ্রুতি মিললেও সমাধান হয়নি। স্থানীয় নেতা থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের বাড়িতে তারা গিয়েছেন; কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাসই দিয়েছেন। এর মধ্যেই রাজ্য সরকারের পক্ষে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি শুরু হয়। স্থানীয় নেতা-মন্ত্রীরা গ্রামবাসীর দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে তাদের অভাব-অভিযোগ শুনছেন। এই গ্রামেও ‘দিদির দূতরা' আসবেন- এ খবর চাউর হতেই পাঁসিপাড়ায় দেয়ালে এ ধরনের লেখা হয়। ললিতা চৌধুরী নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমার গ্রামে কিছুই নেই। দিদির দূতদের তাই ঢুকতে দেব না। ভোটও দেব না।’
গোপাল ঋষি নামে আরেক বাসিন্দাও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত ভোট আসছে। নেতা-মন্ত্রীরা মিটিং করছেন। এলাকায় এলাকায় ঘুরছেন; কিন্তু ৩ বছর ধরে যে পঞ্চায়েত সদস্যরা আছেন, তারা তো কোনো কাজ করেননি। রাস্তা হয়নি। পানির ব্যবস্থা করেনি। আলো এবং পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাও নেই। তাই তাদের প্রবেশ নিষেধ। এ বিষয়ে মালদহের তৃণমূল জেলা সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সি বলেন, অভাব-অভিযোগ শোনার জন্যই তো এমন (দিদির দূত) কর্মসূচি। সমস্যা সমাধান হয়ে গেলে গ্রামবাসীর ক্ষোভ থাকবে না। তিনি আরও দাবি করেন, বিজেপির ফাঁদে পড়ে গ্রামবাসীর কয়েকজন এমন দেয়াল লিখেছেন। তাতে অবশ্য বিজেপি হালে পানি পাবে না।
দেয়াল লিখন নিয়ে মালদহ উত্তরের এমপি খগেন মুর্মুর কথায়- দিদির ভূতের ভয়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। আবার হয়তো প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে কাটমানি তোলার ফন্দি করেছেন দিদির ভাইয়েরা। তাই দিদির দূতদের গ্রামে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে প্রচার করছেন এলাকাবাসী।
গত ২ জানুয়ারি তৃণমূলের মেগা বৈঠকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ নামে কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল আরও নিবিড় জনসংযোগ। তারই একটি অংশ ‘দিদির দূত’ হয়ে গ্রামে গ্রামে ঘোরা। ১১ জানুয়ারি থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। বিভিন্ন জেলায় একেকটি দল কাজ করছে। তারকা বিধায়ক, এমপি থেকে নেতা, মন্ত্রী- সবাইকে যেতে হবে জনতার দুয়ারে- এমনই কড়া নির্দেশ ছিল তৃণমূল নেত্রী মমতার।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: