‘পার হতে গিয়ে যদি পড়ে যাই, বই-খাতা পানিতে চলে যাবে’

ডিহি ইউনিয়নের সাড়াতলা ও ঝিকরগাছার বেলতা গ্রামের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী বেলতা খালের ওপর সম্পূর্ণ স্থানীয় উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি এখন ভেঙে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

‘পার হতে গিয়ে যদি পড়ে যাই, বই-খাতা পানিতে চলে যাবে’

প্রথম নিউজ, যশোর: যশোরের শার্শা উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের বেলতা খালের ওপর সেতুর অভাবে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে উপজেলার ৩০ হাজার মানুষকে। অথচ সাড়াতলা-বেলতা সড়কের বেলতা খালের দুই পাশে ৩০০ ফুট দুরত্বের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ অবকাঠামোর আওতায় নির্মিত পাকা সড়ক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেতু নির্মাণের জন্য এ পর্যন্ত তিনবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।  

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের সাড়াতলা ও ঝিকরগাছার বেলতা গ্রামের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী বেলতা খালের ওপর সম্পূর্ণ স্থানীয় উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি এখন ভেঙে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, কাঠ-বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে চলাচলের অনুপোযোগী হওয়ায় প্রতিনিয়ত যাতায়াতে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জরাজীর্ণ সেতুটি। কাছাকাছি বিকল্প সড়ক না থাকায় নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ভাঙা সেতু দিয়ে চলাচল করছে। মাঠে উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণে কৃষকদেরও চরম বেগ পেতে হচ্ছে।

স্থানীয় সমাজকর্মী নুর ইসলাম জানান, স্থানীয়রা কয়েক বছর আগে গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে কাঠ-বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি তৈরি করে। ওই সাঁকো ব্যবহার করে পন্ডিতপুর, শাড়াতলা, গোকার্ণ, দুর্গাপুর, চন্দ্রপুর, খলিসাখালী, পাকশিয়া, কাশিপুর, বাউন্ডারি এমন আশপাশের ১৫টি গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে আসছিলেন। কয়েক মাস আগে এটি ভেঙে পড়ায় এলাকাবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

বেলতা গ্রামের কৃষক জাবেদ সরদার বলেন, মাঠের ফসল বাড়িতে নিয়ে যেতে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুই থেকে তিন মাইল ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে যেতে হয়, না হলে ভেলায় করে ফসল পার করতে হয়। এতে সময়, ফসল সব কিছুরই ক্ষতি হচ্ছে। কলেজছাত্র নাহিদ হাসান বলেন, ‘আগে বাড়ি থেকে কলেজে যেতে ২৫ মিনিট সময় লাগতো। কিন্তু সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার পর, অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে হয়। এজন্য আগের থেকে পথ বেড়েছে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। এখন কলেজ যেতে ৪০-৪৫ মিনিট বেশি সময় লাগে।’

স্কুলছাত্র আরিফ শেখ বলে, ভাঙা সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। পার হতে গিয়ে একবার যদি পড়ে যাই, তাহলে বইখাতা সব পানিতে চলে যাবে। ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মুকুল বলেন, কাগজপত্র সব উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে নিয়ে ঢাকা এলজিইডি দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রজেক্ট ডিরেক্টর দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।

শার্শা উপজেলা প্রকৌশলী এমএম মামুন হাসান বলেন, বেলতা খালে সেতু নির্মাণে ২০২০ সাল থেকেই প্রস্তাবনা পাঠানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনবার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।  স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন বলেন, সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার কথা শোনার পর পরই সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। কাজটি যাতে দ্রুত শুরু হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তিনি এলাকার মানুষকে হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানান।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom