ধর্ষনে ব‍্যর্থ হয়ে বাস থেকে ফেলে দেওয়া সেই গার্মেন্টসকর্মীর মৃত্যু

নিহত শামছুন্নাহার কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা গ্রামের বাসিন্দা। সে স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে।

ধর্ষনে ব‍্যর্থ হয়ে বাস থেকে ফেলে দেওয়া সেই গার্মেন্টসকর্মীর মৃত্যু

প্রথম নিউজ, ময়মনসিংহ :  ধর্ষন চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বাস থেকে ফেলে দেওয়া গার্মেন্টস কর্মী শামছুন্নাহার (৩৫) দুইদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর অবশেষে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারে আহাজারি সৃষ্টি হয়েছে। আজ রবিবার (১৮ জুন) বেলা পৌনে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

নিহত শামছুন্নাহার কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা গ্রামের বাসিন্দা। সে স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে স্বামী শাজাহানের সাথে শামছুন্নাহারের বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ায় ১ মেয়ে ও ২ ছেলে সন্তান নিয়ে গামের্ন্টেস শ্রমিকের কাজ করে কষ্টকর জীবন-যাপন করতেন বলে জানিয়েছেন নিহতের বড় ভাই সেকান্দর আলী।  

এ সময় কান্নাজড়িত কন্ঠে এ ঘটনার সুষ্ঠ বিনচার দাবি করে সেকান্দর আলী বলেন, আমার মত আর কারো বোন যেন এই ধরনের ঘটনার শিকার না হয়। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।  ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: কামাল হোসেন এই গামের্ন্টস কর্মী মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত ১৬ জুন রাতে গার্মেন্টস ছুটির পর গাজীপুর জেলার মাওনা থেকে হাইওয়ে মিনি পরিবহনের একটি বাসে করে ভালুকায় আসছিল নিহত শামছুন্নাহার। এ সময় যাত্রাপথে বাসের অন্য যাত্রীরা নেমে গেলে ফাঁকা বাসে ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা করে বাসটির চালক ও হেল্পাররা। এ ঘটনায় ওই নারী তাদের বাঁধা দিয়ে চিৎকার শুরু করলে চালক ও হেল্পাররা তাকে চলন্ত বাসের জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে পালিয়ে যায়।  

এতে ওই নারীর মাথায় মারাত্মক জখম হলে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়।   ওসি আরও জানান, ওই রাতেই বাস’সহ জড়িত তিনজনকে আটক করে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আটককৃতরা হলেন- চালক মো: রাকিব মিয়া (২১), সুপারভাইজার আনন্দ দাস (১৯) ও হেল্পার মো: আরিফ মিয়া (২১)।

এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল ১৭ জুন ওই নারীকে দেখতে মমেক হাসপাতালে ছুটে যান ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) মো: মাছুম আহম্মেদ ভূঞা। এ সময় তিনি ওই নারীর সুচিকিৎসায় পাশে থাকার আশ^াস দিয়েছিলেন।