১৫ হাজার বাংলাদেশী কর্মী নেবে গ্রিস

দুই দেশের মধ্যে হওয়া এই সংক্রান্ত একটি সমঝোতা চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে গ্রিসের পার্লামেন্ট।

১৫ হাজার বাংলাদেশী কর্মী নেবে গ্রিস
১৫ হাজার বাংলাদেশী কর্মী নেবে গ্রিস

প্রথম নিউজ, ডেস্ক: মৌসুমি কাজের ভিসায় পাঁচ বছরের জন্য মোট ১৫ হাজার বাংলাদেশী কর্মী নেবে গ্রিস। দুই দেশের মধ্যে হওয়া এই সংক্রান্ত একটি সমঝোতা চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে গ্রিসের পার্লামেন্ট। গ্রিসে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের বিষয়ে গত কয়েক মাস ধরে আলোচনা চলছিল দুই দেশের সরকারের মধ্যে। এর অংশ হিসেবে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সমঝোতা স্মারক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ঢাকা ও এথেন্সের সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয়ও। সেই সমঝোতা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে পাঁচ বছরে ১৫ হাজার মৌসুমি কর্মী নিতে সম্মত হয় গ্রিস। তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নির্ভর করছিল দেশটির পার্লামেন্টের অনুমোদনের ওপর। অবশেষে বুধবার প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিতে পাস হয়েছে। দেশটির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রী নোতিস মিতারাচি টুইটে এই খবর নিশ্চিত করেছেন। এই উদ্যোগের ফলে ‘অবৈধ অভিবাসনের কারণগুলো’ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

কৃষিখাতে কাজের সুযোগ : গত ফেব্রুয়ারির সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী, গ্রিস সরকার বাংলাদেশীদের প্রতি বছর কৃষিখাতে চার হাজার মৌসুমি কাজের ভিসা দিবে। আগামী পাঁচ বছরে সর্বমোট ১৫ হাজার বাংলাদেশীকে এই ভিসা প্রদান করবে দেশটি। চুক্তি অনুযায়ী, মৌসুমি ভিসা নিয়ে আসা বাংলাদেশীরা একটি নির্দিষ্ট কাজ নিয়েই গ্রিসে আসবেন এবং বছরে ৯ মাস গ্রিসে বসবাস ও কাজের সুযোগ পাবেন। কৃষিখাতে ভিসা পাওয়া প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৯ মাস পরে বাংলাদেশে ফেরত যেতে হবে, যা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার দায়বদ্ধ থাকবে। একজন ব্যক্তি এভাবে বছরে ৯ মাস করে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর গ্রিসে বৈধ অভিবাসী হিসেবে কাজ করতে পারবেন। সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কোনো ব্যক্তি এই ভিসা নিয়ে গ্রিসে কাজ করলেও তিনি নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন না।

লক্ষ্য ‘অবৈধ অভিবাসন’ ঠেকানো : গ্রিস সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৈধ অনুমতি নিয়ে দেশটিতে বসবাস করা বাংলাদেশীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১২ হাজার। এর বাইরে অনেকে রয়েছেন, যাদের বসবাসের অনুমতি নেই বা আশ্রয় আবেদন বাতিল হয়েছে। অবৈধ উপায়ে গ্রিসে প্রবেশ বন্ধে কড়াকড়ির পাশাপাশি সম্প্রতি এমন অভিবাসীদের বিরুদ্ধেও তৎপর হয়েছে কর্তৃপক্ষ।গত ডিসেম্বরে একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ১৯ বাংলাদেশীকে ঢাকায় ফেরত পাঠায় এথেন্স। সেই সময় গ্রিসের মন্ত্রী নোতিস মিতারাচি জানান, বাংলাদেশের সরকারের সহযোগিতায় পাঁচ বছর পর অনিয়মিত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটি। গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সুরক্ষার আওতায় যারা নেই, তাদেরকে ফেরত পাঠাচ্ছে গ্রিস। অনিয়মিত অভিবাসী ফেরত নিতে ঢাকা সহযোগিতা করায় বৈধপথে বাংলাদেশ থেকে গ্রিসে মৌসুমি কর্মী আনার সুযোগ তৈরিহবে বলেও জানান তিনি। দুই দেশের চুক্তিতেও ফেরত পাঠানোর এই প্রক্রিয়া আরো জোরদারের কথা বলা হয়েছে। সমঝোতা চুক্তির পর গ্রিসের অভিবাসন ও শরণার্থী মন্ত্রণালয়ের দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে লড়াইও অবৈধভাবে যারা বসবাস করছে, তাদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে দুই দেশ একসাথে কাজ করবে। পাচারচক্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে গ্রিসের অবস্থান পরিষ্কার।

বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদও এই বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর সম্পূর্ণ নিয়োগকারীদের ব্যয়ে গ্রিসে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো আগ্রহী ব্যক্তি যেন কোনোভাবে কোনো দালাল বা প্রতারকের খপ্পরে না পড়েন, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সূত্র : ডয়চে ভেলে

 Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom