সঞ্চয়পত্রের মুনাফা বাড়লে কারা কত পাবেন?
প্রথম নিউজ, অনলাইন : জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত সঞ্চয় কর্মসূচিগুলোর মুনাফার হার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। স্কিমের ধরন অনুযায়ী নতুন মুনাফার হার ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমানে স্কিমের ধরন অনুযায়ী মুনাফার হার ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।
নতুন করে সঞ্চয়পত্রের যে মুনাফার হার নির্ধারণ করা হচ্ছে, এই হারে সবাই মুনাফা পাবেন না। মুনাফার নতুন হার যেদিন থেকে কার্যকর হবে, সেদিন বা তার পরে যারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করবেন তারাই বর্ধিত নতুন হারে মুনাফা হবে। আর যারা আগে সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছেন, তারা আগের নির্ধারিত হারেই মুনাফা পাবেন। উৎসে কর আগের হারে কাটা হবে নাকি কোনো পরিবর্তন আসবে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বাড়ানোর সুপারিশ করে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরডি) একটি সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। অর্থ বিভাগের তৈরি এ প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অর্থ বিভাগের সুপারিশে নতুন মুনাফার হার ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করতে বলা হয়েছে।
অর্থ বিভাগ থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার নির্ধারণে যে সুপারিশ করেছে তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। শিগগির মুনাফার হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকেও ১ জানুয়ারি থেকে সঞ্চয়পত্রের বাড়তি নতুন মুনাফা কার্যকর করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কোন সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কত হবে তা নির্ধারণ করে শিগগির অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে পরিপত্র জারি করা হবে। যদি ১ জানুয়ারি থেকে নতুন মুনাফার হার কার্যকর হয়, তাহলে যারা ১ জানুয়ারি বা তার পরে সঞ্চয়পত্র কিনবেন তারা নতুন হারের মুনাফা পাবেন। আর ১ জানুয়ারির আগে যাদের সঞ্চয়পত্র কেনা আছে, তারা আগের হারেই মুনাফা পাবেন।
অর্থ বিভাগের সুপারিশ
অর্থ বিভাগ যে সুপারিশ করেছে, সেখানে বিনিয়োগকারীদের দুটি ধাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। একটি ধাপে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারী। অন্য ধাপটি হলো ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার ওপরের বিনিয়োগকারী। বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের ১ থেকে ১৫ লাখ টাকা, ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা এবং ৩০ লাখ ১ টাকার বেশি এই তিনটি ধাপ রয়েছে।
সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফার হার ৫ বছর মেয়াদি ও ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের গড় সুদহার অনুযায়ী করার সুপারিশ করেছে অর্থ বিভাগ। এ দুই ধরনের ট্রেজারি বন্ডের সবশেষ ছয়টি নিলামকে বিবেচনায় নিয়ে নতুন মুনাফার হার নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে ছয় মাসের বন্ডের সুদের গড় হার ঠিক করা হয়েছে ১২ দশমিক ২৫ থেকে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত।
সঞ্চয়পত্রের নতুন হার চলতি বছরের ১ জানুয়ারির থেকে জুন মাস পর্যন্ত করার সুপারিশ করেছে অর্থ বিভাগ। এরপর জুন মাসে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের নতুন হার নির্ধারণ করা হবে। এই মুনাফার হার নির্ধরণের দায়িত্ব পালন করবে নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা কমিটি (সিডিএমসি)।
যোগাযোগ করা হলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, অর্থ বিভাগ থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার নির্ধারণে যে সুপারিশ করেছে তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। শিগগির মুনাফার হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
নতুন হারের মুনাফা কি সবাই পাবেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, না, সবাই নতুন হারে মুনাফা পাবেন না। নতুন হার যেদিন থেকে কার্যকর হবে, সেদিন বা তার পরে যারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করবেন তারাই এই হারে মুনাফা পাবেন। আর যারা আগেই সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছেন, তারা আগের হারে মুনাফা পাবেন।
কবে থেকে নতুন হার কার্যকর হবে? এমন প্রশ্ন করলে এই কর্মকর্তা বলেন, অর্থ বিভাগ ১ জানুয়ারি থেকে নতুন মুনাফার হার কার্যকর করার সুপারিশ করেছে, আমরাও আপাতত ১ জানুয়ারি থেকে নতুন হার কার্যকর করার লক্ষ্যে কাজ করছি। তবে এখন নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না ১ জানুয়ারি থেকে নতুন মুনাফার হার কার্যকর হবে। আমরা কাজ করছি। এটা আবার সচিব মহোদয় ও উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে যাবে। তারপর চূড়ান্ত হবে কবে থেকে নতুন হার কার্যকর হবে।
পরিবার সঞ্চয়পত্র
১৮ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যে কোনো বাংলাদেশি নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী পুরুষ ও নারী এবং ৬৫ বছর ও তার বেশি যে কোনো বাংলাদেশি পুরুষ ও নারী এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হারে এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফা পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ২০২১ সালে নির্ধারণ করা হার অনুযায়ী- এই সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে সাড়ে ৯ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে সাড়ে ১০ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ হারে মুনাফা পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
সবাই নতুন হারে মুনাফা পাবেন না। নতুন হার যেদিন থেকে কার্যকর হবে, সেদিন বা তার পরে যারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করবেন তারাই এই হারে মুনাফা পাবেন। আর যারা আগেই সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছেন, তারা আগের হারে মুনাফা পাবেন।
১ জানুয়ারি থেকে নতুন মুনাফার হার কার্যকর করার জন্য অর্থ বিভাগ যে সুপারিশ করেছে, সেখানে পরিবার সঞ্চয়পত্র শুধু ৫ বছর মেয়াদি রাখা হয়েছে এবং এর মুনাফার সম্ভাব্য হার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য সাড়ে ১২ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ, পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার প্রায় ১ শতাংশ বাড়ছে।
অন্যভাবে বলা যায়, আগে এক লাখ টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র কিনলে বছরে ১১ হাজার ৫২০ টাকা মুনাফা পেতেন। নতুন হারে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ করলে এক লাখে বছরে ১২ হাজার ৫০০ টাকা মুনাফা পাওয়া যাবে। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার ওপরে বিনিয়োগ করলে এক লাখে বছরে মুনাফা হবে ১২ হাজার ৩৭০ টাকা।
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র
সব শ্রেণি-পেশার বাংলাদেশি নাগরিক এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এছাড়া আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ (অংশ-২) এর বিধি ৪৯-এর উপ-বিধি (২) এ সংজ্ঞায়িত স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিল এবং ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ (১৯২৫ এর ১৯ নং) অনুযায়ী পরিচালিত ভবিষ্য তহবিলও বিনিয়োগ করতে পারবে।
পাশাপাশি আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর ৬ষ্ঠ তফসিলের পার্ট-এ এর অনুচ্ছেদ ৩৪ অনুযায়ী মৎস্য খামার, হাঁস-মুরগির খামার, পেলিটেড পোল্ট্রি ফিডস উৎপাদন, বীজ উৎপাদন, স্থানীয় উৎপাদিত বীজ বিপণন, গবাদি পশুর খামার, দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের খামার, ব্যাঙ উৎপাদন খামার, উদ্যান খামার প্রকল্প, রেশম গুটিপোকা পালনের খামার, ছত্রাক উৎপাদন এবং ফল ও লতাপাতার চাষ থেকে অর্জিত আয় যা সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনার প্রত্যয়ন করে এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা যাবে।
২০২১ সালে নির্ধারণ করা হার অনুযায়ী- এই সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ হারে মুনাফা পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
১ জানুয়ারি থেকে নতুন মুনাফার হার কর্যকর করার জন্য অর্থ বিভাগ যে সুপারিশ করেছে, সেখানে শুধু ৫ বছর মেয়াদি মুনাফার হার রাখা হয়েছে। এর মুনাফার সম্ভাব্য হার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১ শতাংশের বেশি বাড়ছে।
অন্যভাবে বলা যায়, আগে এক লাখ টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র কিনলে বছরে ১১ হাজার ২৮০ টাকা মুনাফা পেতেন বিনিয়োগকারীরা। নতুন হারে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ করলে এক লাখে বছরে ১২ হাজার ৪০০ টাকা মুনাফা পাওয়া যাবে। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার ওপরে বিনিয়োগ করলে এক লাখে বছরে মুনাফা হবে ১২ হাজার ৩৭০ টাকা।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র
সব শ্রেণি-পেশার বাংলাদেশি নাগরিক এবং অটিস্টিকদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান/অন্য যে কোনো অটিস্টিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান (যাদের সঞ্চয়পত্রের মুনাফা অটিস্টিকদের সহায়তায় অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে) এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারবে।
২০২১ সালে নির্ধারণ করা হার অনুযায়ী- এই সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে ১০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে সাড়ে ১০ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ হারে মুনাফা পান বিনিয়োগকারীরা। ১ জানুয়ারি থেকে নতুন মুনাফার হার কার্যকর করার জন্য অর্থ বিভাগ যে সুপারিশ করেছে, সেখানে শুধু তিন বছর মেয়াদি মুনাফার হার রাখা হয়েছে। এর মুনাফার সম্ভাব্য হার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ, এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১ শতাংশের বেশি বাড়ছে।
অন্যভাবে বলা যায়, আগে এক লাখ টাকার তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র কিনলে বছরে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৪০ টাকা মুনাফা পেতেন বিনিয়োগকারীরা। নতুন হারে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ করলে এক লাখে বছরে ১২ হাজার ৩০০ টাকা মুনাফা পাওয়া যাবে। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার ওপরে বিনিয়োগ করলে এক লাখে বছরে মুনাফা হবে ১২ হাজার ২৫০ টাকা।
পেনশনার সঞ্চয়পত্র
এই সঞ্চয়পত্র অবসরভোগী সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য, মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী, স্ত্রী, সন্তানরা কিনতে পারেন।
২০২১ সালে নির্ধারণ করা হার অনুযায়ী- এই সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ২০ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ হারে মুনাফা পান বিনিয়োগকারীরা।
১ জানুয়ারি থেকে নতুন মুনাফার হার কার্যকর করার জন্য অর্থ বিভাগ যে সুপারিশ করেছে, সেখানে শুধু ৫ বছর মেয়াদি মুনাফার হার রাখা হয়েছে। এর মুনাফার সম্ভাব্য হার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার প্রায় ১ শতাংশ বাড়ছে।
অন্যভাবে বলা যায়, আগে এক লাখ টাকার পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনলে বছরে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৭৬০ টাকা মুনাফা পেতেন বিনিয়োগকারীরা। নতুন হারে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ করলে ১ লাখে বছরে ১২ হাজার ৫৫০ টাকা মুনাফা পাওয়া যাবে। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার ওপরে বিনিয়োগ করলে এক লাখে বছরে মুনাফা হবে ১২ হাজার ৩৭০ টাকা।
পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট
২০২১ সালে নির্ধারণ করা হার অনুযায়ী- এই সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ হারে মুনাফা পান বিনিয়োগকারীরা। ১ জানুয়ারি থেকে নতুন মুনাফার হার কার্যকর করার জন্য অর্থ বিভাগ যে সুপারিশ করেছে, সেখানে শুধু ৩ বছর মেয়াদি মুনাফার হার রাখা হয়েছে।
এই সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফার সম্ভাব্য হার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার প্রায় ১ শতাংশ বাড়ছে।
অন্যভাবে বলা যায়, আগে ১ লাখ টাকার পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট করলে বছরে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ২৮০ টাকা মুনাফা পেতেন বিনিয়োগকারীরা। নতুন হারে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ করলে এক লাখে বছরে ১২ হাজার ৩০০ টাকা মুনাফা পাওয়া যাবে। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার ওপরে বিনিয়োগ করলে ১ লাখে বছরে মুনাফা হবে ১২ হাজার ২৫০ টাকা।
উৎসে কর কত কাটা হবে জানা যায়নি
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সর্বমোট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার ওপর ৫ শতাংশ হারে এবং এর অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটা হয়। ১ জানুয়ারি থেকে নতুন যে মুনাফার হার কার্যকর করতে বলা হয়েছে, সেখানে উৎসে কর কীভাবে কাটা হবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
কত টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যায়
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রে সমন্বিতভাবে একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অথবা যুগ্ম নামে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করা যায়। নতুন মুনাফার হার কার্যকর করতে অর্থ বিভাগ যে সুপারিশ করেছে, সেখানে বিনিয়োগ সীমা নিয়ে কিছু বলা হয়নি।