প্রথম নিউজ, পঞ্চগড় : ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ফের পুশইন করেছে নারী ও শিশুসহ ১৮ জন বাংলাদেশিকে। বুধবার (২৫ জুন) ভোরে পঞ্চগড় জেলার তিনটি পৃথক সীমান্ত—তেঁতুলিয়ার শুকানি, সদর উপজেলার টোকাপাড়া ও জয়ধর ভাঙা সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়। পরে সকালে টহলরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা ওইসব অভ্যন্তরে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের আটক করে নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোরে নীলফামারী ৫৬ বিজিবির আওতাধীন শুকানি বিওপি এলাকা দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ৪৬ ব্যাটালিয়নের ট্যাপরাভিটা ক্যাম্পের সদস্যরা সীমান্তের মেইন পিলার ৭৪১ এর ৪ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে নারী পুরুষ, শিশু সহ ৫ জনকে পুশইন করে। পরে পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভজনপুর বিওপির টহল দল সীমান্তের মেইন পিলার ৪২৮ থেকে দুই কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের ধানশুকা এলাকায় তাদের আটক করে স্থানীয় বিওপিতে নিয়ে যায়।
এদিকে, বুধবার ভোরে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের টোকাপাড়া বিওপির মহারাজা দিঘী সীমান্ত দিয়ে মেইন পিলার ৭৪৫ এর ৩-৪ সাব পিলার এলাকা দিয়ে নারী, পুরুষ, শিশুসহ ৬ জনকে পুশইন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ৯৩ ব্যাটালিয়নের স্থানীয় ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে টোকাপাড়া বিওপির টহল দল কমলাপাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করে স্থানীয় ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
এছাড়া সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের জয়ধর ভাঙা সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫৮ এর ৯ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে বিএসএফের ৯৩ ব্যাটালিয়নের শ্যাম বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা ৭ জনকে পুশইন করে। সকালে জয়ধর ভাঙা বিওপির বিজিবি সদস্যরা আটক করে।
বিজিবি সূত্র জানায়, আটককৃতরা অবৈধভাবে ভারতের গুজরাটে বসবাস করে আসছিল। মঙ্গলবার (২৪ জুন) তাদের গুজরাট থেকে ভারতীয় পুলিশ আটক করে আকাশ ও সড়কপথে বাগডোকরা ও শিলিগুড়িতে নিয়ে আসে। এরপর সড়কপথে ৪৬ ও ৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কাছে হস্তান্তর করে। বুধবার তাদের বাংলাদেশে পুশইন করে বিএসএফ। আটককৃতরা নড়াইল জেলার কালিয়া এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হয়েছে বিজিবি।
তিন সীমান্তেই আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত করে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করবে বলে জানা গেছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, আমাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা দিয়ে মোট ১৩ জন পুশইন করেছে। আর ১৮ বিজিবি ৫ জনকে আটক করে। আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরী করার মাধ্যমে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। পুলিশ তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করবে।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের শুকানি ক্যাম্প এলাকা দিয়ে পাঁচজন বাংলাদেশের প্রবেশ করার পরে দেবনগর ইউনিয়নের ধানশুকা এলাকায় আমাদের ভজনপুর বিওপির টহল দল তাদের আটক করে। আমরা তেতুলিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী করে তাদেরকে হস্তান্তর করেছি।