সরকারি সুবিধায় সোহাওয়ার্দি উদ্যানে যুবলীগের সমাবেশ: খসরু

 আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে এই আলোচনা হয়।

সরকারি সুবিধায় সোহাওয়ার্দি উদ্যানে যুবলীগের সমাবেশ: খসরু

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সোহাওয়ার্দি উদ্যানে যুবলীগের সমাবেশ ‘সরকারি সুবিধা’য় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।  

 আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে এই আলোচনা হয়।

 আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,আজকে এখানে(সোহরাওয়ার্দি উদ্যান)যুব লীগের সম্মেলন আছে। আমি আসার পথে দেথলাম অনেক কিছু। আজকে বাংলাদেশে জনসাধারণের জন্য কোনো বাস আছে বলে আমার মনে হলো না, সব পরি্বহন আজ ওদের দখলে, ওদের নিয়ন্ত্রণে। সব রাস্তা-ঘাট বন্ধ। এভাবে সব আয়োজন করা হয়েছে। বুঝতে পারেন একটা  দলের সম্মেলন করতে তাদেরকে এতো কিছু জোগাড় করতে হচ্ছে, সরকারি এতো কিছুর সুযোগ-সুবিধা নিতে হচ্ছে। রাস্তা-ঘাটের অবস্থা দেখে মনে হলো যে, বাংলাদেশ একটা একদলীয় শাসনের মধ্যে আছে। মনে হলো এখানে রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে। এটা যে দলের অনুষ্ঠান কেউ বুঝতে পারবে না যদি তাদেরকে বলা না হয়। কোনো বিদেশী কোনো বাইরের মানুষ যদি এখানে অবস্থান করে ওরা মনে করবে যে, বোধহয় বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে। এটা কোনো দলের অনুষ্ঠান এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। 

রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসির বাস ব্যবহারের প্রসঙ্গ টেনে আমীর খসরু বলেন, সব চেয়ে ইন্টারেস্টিং মনে হলো বিআরটিসির বাসের মধ্যে ব্যানার লাগিয়ে ওরা সম্মেলন আসছে। লজ্জা-শরম তো থাকার কথা। না হয়, আইন মানলেন না, সংবিধান মানলেন না, গণতন্ত্র মানলেন না, জনগনের সব অধিকার কেড়ে নিলেন তারপরেও তো একটা লজ্জা শরমের ব্যাপার আছে। বিআরটিসির বাসে তো কোনো দলের ব্যানার লাগিয়ে যাওয়ার কথা নয়। এটি সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। সেটা তো পয়সা দিয়ে ভাড়া করা যায় না। তাহলে কিভাবে ওরা করছে। এটাই ক্ষমতার দাপট, অপব্যবহার…।”

 বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের দুই/তিনদিন আগে পরিবহন ধর্মঘট ডাকার বিষয়টি তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, ‘‘ আর বিএনপির বেলায় সব বন্ধ। কোনো পরিবহন থাকতে পারবে না- বাস থাকতে পারবে না, স্টিমার থাকতে পারবে না, লঞ্চ চলতে পারবে না, স্পিড বোট চলতে পারবে না।শুধু তাই নয়, রিকশা চলতে পারবে না, নসিমন চলতে পারবে না, টেম্পু থাকতে পারবে না। কিছুই থাকতে পারবে না। এতে আমাদের একটা লাভ হয়েছে।এই আন্দোলন একটা জিনিস আমরা শেখেছি যে, পরিবহন ছাড়াও আন্দোলন করা যায়। আন্দোলন এমন মাত্রা পেয়েছে যে, মানুষ দেশপ্রেমে উদ্ধুব্ধ হয়ে কোনো পরিবহন ছাড়া সমাবেশগুলোতে উপস্থিত হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি তাদের যে অবিরাম ভালোবাসা প্রমাণ করেছে। এটা আন্দোলন নয়, এটা বিপ্লবে পরিণত হয়েছে।”

 তিনি বলেন, আন্দোলনে কেউ বেলাতে করে নদী পার হয় না, সাঁতরিয়ে নদী পার হয় না। আন্দোলনে কেউ রাস্তায় ঘুমায় না, কেউ আন্দোলন তিন দিন চিড়া-মুড়ি নিয়ে জনসমাবেশে যায় না। প্রত্যেকটি সমাবেশে মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ মুখর হয়ে দেশের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। এটা আন্দোলন নয়, একটা বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে। কেনো বিএনপির সমাবেশে মানুষ আসছে তা উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তার মালিকানা হারিয়ে, বিগত বছর গুলোতে মানুষ সব অধিকার হারিয়ে, আইনের শাসন হারিয়ে, জীবনের নিরাপত্তা হারিয়ে, বাক স্বাধীনতা হারিয়ে এমন পর্যায়ে এসেছে তাদের দুই বেলা খাবারও জুটছে না। ৪২% মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে চলে গেছে। বিদ্যুতের অভাবে মানুষ অন্ধাকারে আছে, মিল-ফ্যাক্টরি চলছে না, মানুষের কর্মসংস্থান নাই, দ্রব্যের মূল্যের ঊধর্বগতি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে, ভয়ভীতির পরিবেশে তারা আছে। এখন মুক্তির ডাক এসেছে। মুক্তির ডাক এসেছে কিভাবে? বিএনপি তার অবস্থান পরিস্কার করেছে। এই নির্বাচনের খেলা, এই নির্বাচনের খেলা প্রত্যকবার নির্বাচন আসে এই খেলা শুরু হয়। এবার কিন্তু আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব একটা বিষয় পরিস্কার করেছেন, বিএনপি এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নাই। বাংলাদেশের মানুষ যদি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হয় তাহলে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। বিএনপি এখন এটাও পরিস্কার করেছে, বিএনপি শুধু নির্বাচনেই যাবে না, এই সরকারকে অপসারণ করবে।”

 এজন্য জনগন ‘রাস্তায় ফয়সালা, আন্দোলনের মাধ্যমে ফয়সালা’ করবে বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সাবেক নিলোফার চৌধুরী মনি, পিরোজপুরের সভাপতি আলমগীর হোসেন, উলামা দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম তালুকদার প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom