সরকার হটানোর আন্দোলনের ‘সর্বাত্মক’ কর্মসূচির কোনো বিকল্প নেই: নোমান
আমার সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে বেঁচে থাকার অধিকার
প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকার হটানোর আন্দোলনের ‘সর্বাত্মক’ কর্মসূচির কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে আজ বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের(রুনেসা) উদ্যোগে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা ও অগ্নিঝরা মতিজহার এবং রিজভী আহমেদ’ শীর্ষক দোয়া মাহফিল ও আলোচনার এই অনুষ্ঠান হয়।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, বাস্তবতার নিরি্খে আপনি যদি সরকার পতনের আন্দোলনের কর্মসূচি দেন সেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালীন যে বক্তব্য ভেসে আসছিলো সেই শক্তি ভেসে আসবে। কিন্তু কর্মসূচি দিতে হবে এবং কর্মসূচিটা কিসের? সরকার পতনের আন্দোলনের কর্মসূচি। কর্মসূচি মানে আমি এটা বলব না যে, আমরা পতনের আন্দোলনে যাবো সেটা মারামারি-পিটাপপিটি, এটা-ওটা করবো সেটা…। কান টানলে মাথা আসবে, কানটা টানবো মাথাটা আসবে-এই প্রক্রিয়া যদি যেতে পারি তাহলে আমরা সফল হবো।
বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিচিকৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রসঙ্গ টেনে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, এটা হচ্ছে বাস্তব। অনেক পার্থক্য আছে বাংলাদেশের সাথে ইউরোপ-আমেরিকার চিকিতসা ব্যবস্থা। আমি নিজে অসুস্থ হয়ে দেশের বাইরে চিকিতসা করিয়ে এসেছে। আমি এটা ফিল করেছি। আমার সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে বেঁচে থাকার অধিকার। এটা সরকারের দায়িত্ব অথচ তারা সেটা গ্রহন করছে না। কাজেই সরকার অবশ্যই গ্রহন করবে যদি আমরা আামাদের শক্তিকে আরো জোরদার করতে পারি, একাবদ্ধ হতে পারি। আমাদের প্রয়োজনে, দেশমাতৃকার প্রয়োজনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সেজন্য জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান এই প্রবীন নেতা।
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমার কাছে যেটা মনে হয়-এই দিন শেষ দিন না, আরো দিন আছে। বিচার দেখেন নাই এখনো। এখন যে দুর্নীতি-লুটপাট, হত্যা-গুম, আমেরিকায় কার কী ভিসা বাতিল করেছে এই নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন না, এটা নিয়ে আমি চিন্তিত না। আরে ভাই, আপনারা প্রস্তুত হন, বিচারের কাঠগড়ায় আপনাদের দাঁড়াতে হবে। হ্যাঁ কত দেখলাম ১৯৭১ সালের পর থেকে এই ৫০ বছরে কত দেখলাম। শেষ আছে। আমি যেটা দেখতে না পারি, আমার উত্তরসূরীরা দেখবেই। ভাবার কোনো কারণ নাই যে, আপনি লুটপাট করেছেন ক্ষমতায় সারা জীবন এখানে থাকবেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের প্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু বন্দি নয়, তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে লড়াই করছে। তার মুক্তি ও বিদেশে তার সুচিকিৎসার দাবিতে আমাদের এই মুহুর্তে রাস্তায় নেমে পড়া উচিৎ। আমরা প্রায় বলে থাকি, তাঁর (খালেদা জিয়া) যদি কিছু হয় তাহলে সরকারকে জবাব দিতে হবে। তার কিছু হওয়া পর্যন্ত আমরা সময় দেবো কেনো? তার কিছু হবে কেনো? এই মুহুর্তেই আমাদের রাস্তায় নামা উচিৎ। যার ঘোষণা ও আন্দোলনে সেই আওয়াজ তরঙ্গায়িত হতো সারাদেশে, বিদ্যুত স্পৃষ্ঠের মতো আমাদেরকে উদ্ধুব্ধ করতো, স্বচকিত করতো আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। আজকে গণতন্ত্রের মা ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতীক যিনি দেশের স্বার্থকে কোনো দিন বিসর্জন দেননি সেই নেত্রী আজ একটা হিংসা, প্রতিহিংসা, ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে বন্দি করে রেখে যাদের কোনো ম্যান্ডেট নেই, যাদের কোনো জনগণের সমর্থন নেই এমন একটা দখলবাজ সরকার।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবীরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, বিএনপির শামীমুর রহমান শামীম, তাইফুল ইসলাম টিপু, রমেশ দত্ত, আমিনুল ইসলাম, নুরুজ্জামান তপনসহ রুনেসার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: