রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের জন্মদিন

কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর উপজেলা মিঠামইনের কামালপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের জন্মদিন

প্রথম নিউজ, ঢাকা : আজ ১ জানুয়ারি, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ৮০তম জন্মদিন। ১৯৪৪ সালের এ দিনে বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর উপজেলা মিঠামইনের কামালপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাজি মো. তায়েবউদ্দিন এবং মা তমিজা খাতুন।

রাষ্ট্রপতির জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে তার নিজ জেলা কিশোরগঞ্জে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কেক কেটে রাষ্ট্রপতির জন্মদিন উদযাপন করা হবে। থাকবে নানা মনোজ্ঞ সাংকৃতিক অনুষ্ঠানও।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং জন্মদিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি আবদুল হামিদের সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য কামনা করেন।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে একটি নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে এবং উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে রাষ্ট্রপতি হামিদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের শিক্ষাজীবন শুরু গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর ভৈরব কেবি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। এসএসসি পাস করেন নিকলী উপজেলার গোড়াচাঁদ হাইস্কুল থেকে। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পাস করার পর ঢাকার সেন্ট্রাল ল' কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি নিয়ে কিশোরগঞ্জ বারে আইন পেশায় যোগ দেন আবদুল হামিদ।

১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। উদয়াস্ত পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে অল্পদিনেই কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের একচ্ছত্র নেতায় পরিণত হন তিনি। এক সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সস্নেহ সান্নিধ্য লাভ করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত পছন্দে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বিস্তীর্ণ হাওরের দুর্গম এলাকা থেকে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তদানীন্তন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে (ময়মনসিংহ-১৮) সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। ভারতের মেঘালয়ে রিক্রুটিং ক্যাম্পে এবং সে সময়ে সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের (মুজিব বাহিনী) সাব-সেক্টর কমান্ডার পদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন আবদুল হামিদ।

১৯৭৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর তিনি তার নির্বাচনী এলাকা থেকে ৭ বার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে বিজয়ী হয়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর চরম বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশেও আবদুল হামিদ তার বিশ্বাস এবং আদর্শের জায়গা থেকে তিলমাত্র বিচ্যুত হননি। এ কারণে ১৯৭৬ সালে তাকে কারাবরণ করতে হয়। তবে কোনো নিপীড়নই তাকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে সরাতে পারেনি।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন। পরে তিনি একই সংসদে স্পিকারের দায়িত্ব পান। জাতীয় সংসদে সকল দলের কাছেই তিনি হয়ে ওঠেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে গেলে তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদে আবারও তিনি স্পিকার নির্বাচিত হন।

দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের অসুস্থতাজনিত কারণে তার মৃত্যুর ছয়দিন আগে ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ আবদুল হামিদ বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন। একই বছরের এপ্রিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom