মার্কিন কংগ্রেস থেকে জর্জ স্যান্তোসকে বহিষ্কার
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: ঐতিহাসিক ভোটে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটির রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জর্জ স্যান্তোসকে। নৈতিকতা ও কয়েক ডজন ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ উঠার পর তার বিরুদ্ধে ভোট হয় প্রতিনিধি পরিষদে। এতে তাকে বহিষ্কারের পক্ষে বেশি ভোট পড়ে। ফলে তিনি বহিষ্কার হন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ থেকে ইতিহাসে ৬ষ্ঠ সদস্য হিসেবে বহিষ্কার হলেন স্যান্তোস। আর ২০০২ সালের পর এটাই প্রথম। অতীত নিয়ে বহুবিধ মিথ্যাচার এবং প্রতারণার বহু অভিযোগ দিয়ে চিহ্নিত হয়ে থাকবে তার সময়কাল। এসব প্রতারণা এবং মিথ্যা তথ্য প্রকাশ পায় তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর। এর আগেও দু’বার তাকে বরখাস্তের বিষয়ে ভোট হয়। তাতে ব্যর্থ হয় পরিষদ।
তবে শুক্রবার তৃতীয়বারের ভোটে তিনি বরখাস্ত হন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। ভোট শেষ হওয়ার আগেই তিনি যখন ফল কি হবে বুঝতে পারেন, তখন দ্রুততার সঙ্গে কুইন্সের ৩৫ বছর বয়সী এই কংগ্রেসম্যান ক্যাপিটল ভবন থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় তাকে বিপুল পরিমাণ সাংবাদিক ঘিরে ধরেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অনানুষ্ঠানিকভাবে হয়তো আমি আর কংগ্রেস সদস্য নেই। তাই আপনাদের একটি প্রশ্নেরও উত্তর আমি দেবো না। ততক্ষণে প্রতিনিধি পরিষদে বরখাস্ত প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় সেখান থেকে হাততালির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল।
কমপক্ষে ১১ মাস কংগ্রেসম্যান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন জর্জ স্যান্তোস। এ সময় কংগ্রেসে ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান উভয় দল থেকেই তিনি সীমাহীন বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছেন। তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়। তিনি নির্বাচিত হয়ে ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রতিনিধি পরিষদে আসার পর পরই সমস্যায় পড়েন। এ সময় নিউ ইয়র্ক টাইমস রিপোর্ট করে যে, তিনি ওয়াল স্ট্রিটের ক্যারিয়ার, তার কলেজ ডিগ্রি এবং ইহুদি বংশোদ্ভূত বলে যে পরিচয় দিয়েছেন তা মিথ্যা। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের স্তূপ জমতে থাকে। দাবি করেন, ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলায় তার মা মারা গেছেন। এমন ২৩টি অপরাধের অভিযোগ গঠন করা হয় তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে আছে প্রতারণা, অর্থপাচার, সরকারি তহবিল থেকে অর্থ চুরি। এসব অভিযোগকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
শেষ আঘাতটি আসে গত মাসে। ওই সময় প্রতিনিধি পরিষদের নৈতিকতা বিষয়ক কমিটি দেখতে পায় নিজের ব্যক্তগত আর্থিক সুবিধার জন্য তিনি প্রতিনিধি পরিষদের সব সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। এর মধ্যে তিনি মুখের বলিরেখা দূর করতে, ক্রেডিট কার্ডের অর্থ শোধে এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের একটি অনলাইন প্লাটফরম ব্যবহারের খরচ মিটিয়েছেন নির্বাচনী প্রচারণার তহবিল থেকে। সেখান থেকে তিনি পর্নোগ্রাফি খাতে অর্থ খরচ করেছেন। নিউ ইয়র্কের সমুদ্রতীরবর্তী হ্যাম্পটন্স সফরে অর্থ ব্যয় করেছেন। কোনো সদস্যকে বরখাস্ত করার জন্য কংগ্রেসে ভোটের আয়োজন বিরল। বরখাস্ত করতে হলে প্রস্তাবের পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পড়তে হয়।