মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী হিসেবেই জাসদের সৃষ্টি : নানক

আজ শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দলের মহিলা বিষয়ক উপ কমিটির শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী হিসেবেই জাসদের সৃষ্টি : নানক

প্রথম নিউজ, ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী আড্ডাখানা হিসেবেই জাসদ, গণবাহিনী সৃষ্টি হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।

আজ শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দলের মহিলা বিষয়ক উপ কমিটির শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে সত্য কথা আমাকে বলতেই হবে। সেদিন জাসদ সৃষ্টি, গণবাহিনী সৃষ্টি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছিলো। সেদিন আমাদের বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার করা হয়েছিলো।

বামজোটের হরতাল দেশের জনগণ টের পাইনি বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমন্ডলীর সদস্য নানক বলেন, আজকে যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তখন কিছু অপশক্তি মাঠে নেমেছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য জনগণের মাঝে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে। আজকে একটি অপশক্তি মাঠে নেমেছে আমাদের বিরুদ্ধে। গতকাল একটি হরতাল পালন হয়ে গেলো বাংলাদেশ, কেউ টের পেলো না। রাস্তায় যানজট ছিলো।

দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে নানক বলেন, আমাদেরকে খুব সর্তক হতে হবে। ওরা আবার নেমেছে। ওরা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দিবে না। সে কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা নেমেছে। আপনারা পাকিস্তানি প্রেসক্রিপশনে চলছেন। এদেশে ২১ আগস্টে গ্রেনেট হামলা হয়েছে, কোথায় ছিলো মানবতা?  এই দেশে ৭৫ এ ১৫ আগস্ট হত্যার পরে সুশীল সমাজরা কথা বলে নি, তাদের প্রতি ধিক্কার দেই। তারা আজকে বড়-বড় কথা বলে। আজকে সেই সুশীলদের বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে। আর জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাড়াতে হবে।

বিএনপির নির্বাচনে আসার প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “লন্ডনে থেকে নির্দেশ দিয়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চান। আসেন না খেলার মনোভাব নিয়ে, আসেন না নির্বাচনে, দেখি বাংলার জনগণ কাকে রায় দেয়। উন্নয়নের পক্ষে রায় দেয় নাকি ধ্বংশের পক্ষে রায় দেয়। মির্জা ফখরুল সাহেবরা আগামী বছর ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারির নির্বাচনে আসে। আমি জানি আপনারা আসতে পারবেন না। কারণ তারেক রহমান দেশে আসতে পারবেন না। সেহেতু মির্জা ফখরুল সাহেব, তারেক রহমান আপনাদের নির্বাচনে আসতে দিবে না। আসেন নির্বাচনে, বাংলার জনগণ শিক্ষা দিয়ে দিবে।”

অনুষ্ঠানে আওয়ামী রীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেদিন হালবিহীন নৌকা পরিচালনার আত্বিক ও মানষিক শক্তি কেউ দেখাতে পারেনি। আমি কাউকে ছোট করতে চাই না তবে বলতে চাই আওয়ামী লীগের কর্মীরা কখনও মাথা নোয়ায় না। কর্মীরাই এসে হাল ধরে এটা তারা বার বার প্রমাণ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।” 

পচাত্তরে হত্যাকাণ্ডের সময়ে নিজেদের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “সেদিন কেন আমরা প্রতিরোধ, প্রতিবাদ গড়ে তুলতে পারলাম না। রাজপথে আন্দোলন করতে পারলাম না, সেই ব্যর্থতা নিয়েও আমাদের কথা বলতে হবে। এই ব্যর্থতার দায় আমাদের নিতে হবে।

“ষড়যন্ত্র থেমে যায় নি, আজ যখন বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে। যাদের মাথা গোজার ঠাই নেই, সেই গৃহহীণ মানুষেদের ঘর দেওয়া হচ্ছে মানুষরে কল্যাণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সেই মূহুর্তে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তারা আবার মাঠে নেমেছে। আমাদেরকে সাহসিকতার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত করতে হবে।”

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “নির্বাচন আসলেই সেই পরাজিত শক্তিরা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করে। তাদের উদ্দেশ্যই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা। তাদেরকে ষড়যন্ত্র সফল হতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। অতীতের মতো এবারও তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।”

আলোচনা সভায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, “বিজয়ের আনন্দ ক্ষণস্থায়ী, পরাজয়ের গ্লানি চিরস্থায়ী। এই পরাজয়ের গ্লানি মোচন করা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার জন্য ৭১ এর পরাজিত শক্তি জাতির পিতাকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর প্রথম স্বপ্ন ছিল এদেশের স্বাধীনতা। দ্বিতীয় স্বপ্ন ছিল এদেশের মানুষের মুক্তি। তাই স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই তিনি অর্থনৈতিক মুক্তি সংগ্রামের ডাক দেন।

“সবুজ বিপ্লবের কর্মসূচি শুরু করেন। তখনই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। পৃথিবীতে অনেক রাষ্ট্র নায়কদের হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এভাবে পরিবারের সদস্য ও শিশুদের হত্যা করা হয়নি। জাতির পিতা ও বঙ্গন্ধুপরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী, ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রকারী, নেপথ্য কারিগর ও পরবর্তীতে হত্যাকারীদের রক্ষাকারী ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতকদেরও বিচার করতে হবে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য সুলতানা শফির সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহুমুদা বেগম কৃক।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom