ভারতে দলিত নারীর ওপর নিপীড়ন ,হারানো গয়না মিলল বাড়িতেই , তবুও পুলিশ হেফাজতে ২০ ঘণ্টা নির্যাতন!

ভারতে দলিত নারীর ওপর নিপীড়ন ,হারানো গয়না মিলল বাড়িতেই , তবুও পুলিশ হেফাজতে ২০ ঘণ্টা নির্যাতন!

প্রথম নিউজ, অনলাইন:   ভারতের কেরালার তিরুবনন্তপুরম জেলায় পুলিশের হেফাজতে দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ এনেছেন এক দলিত নারী।  অভিযোগকারী ৩৬ বছর বয়সি বিন্দু নামের ওই নারী বলেন, একটি চুরির মামলায় তার বিরুদ্ধে ভুল অভিযোগ এনে পুলিশ প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে তাঁকে থানায় আটকে রাখে, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না দিয়ে এবং পানীয় জল না দিয়ে তাকে অসহায় অবস্থায় রাখে। 

পরে প্রমাণিত হয়, যার জন্য তাকে আটক করা হয়েছিল, সেই হারটি মূলত হারায়নি; বরং বাড়ির মধ্যেই পাওয়া যায়।  তবু অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ তাকে আরও কয়েক ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রাখে।

ভুক্তভোগী বিন্দু জানান, ১৩ মে বিকেল ৩টায় তাকে তলব করে নিয়ে যাওয়া হয় তিরুবনন্তপুরমের পেরুরকাদা থানায়।  তাকে ছাড়া হয় পরদিন ১৪ মে দুপুর ১২টায়। তিনি মাত্র তিন দিন আগে যে বাড়িতে কাজ শুরু করেছিলেন, সেই বাড়ির মালিক এক হারিয়ে যাওয়া হার সংক্রান্ত চুরির অভিযোগ করেন। অ ভিযোগের ভিত্তিতে বিন্দুকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়।

বিন্দুর অভিযোগ, তিনি বারবার কান্না করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করলেও পুলিশ তাকে ছাড়তে রাজি হয়নি। রাতে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও দেওয়া হয়নি। গভীর রাতে পুলিশ তাঁকে তার পনাভুরের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চুরির হার খুঁজে তল্লাশি চালায়। এরপর আবার তাকে থানায় ফিরিয়ে আনা হয়। এ সময় তাকে এক ফোঁটা পানিও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন বিন্দু।

পরদিন সকালে সেই বাড়ির মালিক থানায় এসে জানান, হারটি তাদের বাড়িতেই পাওয়া গেছে। এরপর পুলিশ বিন্দুকে মুক্তি দেয়। কিন্তু তাতেও তাকে আরও কয়েক ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রাখা হয় এবং ফোন ফিরিয়ে না দিয়ে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ।

নিজের সঙ্গে হওয়া এই মানসিক নিপীড়নের বিচার চেয়ে বিন্দু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তফসিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিচালকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পরে স্থানীয় বিধায়ক ডি. কে. মুরালি বিন্দুর বাড়ি গিয়ে তার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জেনে নিয়েছেন।

ভারতে দলিত নারীরা এখনও নানা স্তরে বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। কেরালার ঘটনাটি সেই দীর্ঘদিনের কাঠামোগত নিপীড়নের একটি সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত।