পাথরঘাটায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা

প্রথম নিউজ, বরগুনা: পাথরঘাটায় পারিবারিক বিরোধের জেরে আবুল হোসেন জমাদ্দার ওরফে ফুয়াদ (৪৫) নামের এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। রোববার বিকেলে উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের ০১ নম্বর ওয়ার্ডে ওই নেতার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। আবুল হোসেন জমাদ্দার উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং কাকচিড়া ইউনিয়নের ০১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত হালিম জমাদ্দারের ছেলে। পারিবারিক বিরোধের জেরে স্থানীয় গোলাম মাওলা জমাদ্দারসহ (২৫) সাত থেকে আটজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপান বলে অভিযোগ স্বজনদের।আবুলের স্ত্রী শিউলি বেগম বলেন, রোববার আসরের নামাজের কিছুক্ষণ আগে তাঁর স্বামীর ফোনে একটি কল আসে। তখন অপর প্রান্ত থেকে উত্তেজিত কণ্ঠে তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়া হয়।
এ ঘটনার পর বাড়ির সামনে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা গোলাম মাওলার নেতৃত্বে সাত আটজনের সশস্ত্র বাহিনী ধারালো রামদা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা চালান। আবুলের বোন মর্জিনা বেগম জানান, গোলাম মাওলার নেতৃত্বে ধারালো রামদা ও চাপাতি দিয়ে একের পর এক কুপিয়ে বাঁ হাতের আঙুল, পেট ও দুই পায়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় তিনি মাওলাকে বলেন, ‘ভাইকে ছেড়ে দে, আর কোপ দিস না।’ এ সময় মাওলা তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে গোলাম মাওলার ফুফু তাসলিমা বেগম বলেন, গোলাম মাওলার বাবা ইউসুফ জমাদ্দার ও আবুল হোসেন জমাদ্দারের মধ্যে টাকা ও জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় কয়েক দিন আগে ইউসুফ ও তাঁর ছোট ছেলেকে আবুল হোসেন জমাদ্দার মারধর করেছিলেন। ওই ঘটনার জেরে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা। এ ঘটনা এলাকাবাসীও জানেন। মানবজমিন প্রতিনিধি জানতে চাইলে কাকচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক এস এম নাসির উদ্দিন সিকদার বলেন, আগে থেকেই আবুল হোসেন ফুয়াদ জমাদ্দার ও গোলাম মাওলা জমাদ্দারের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল।
তা ছাড়া গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কাকচিড়ায় শেখ হাসিনার পোস্টার লাগানোর ঘটনায় গোলাম মাওলার নেতৃত্বে একদল আওয়ামী সমর্থক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিলেন। ওই ঘটনার জেরে বিকেলে ওরা সংগঠিত হয়ে বিএনপি নেতা আবুল হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করেছে। এ ঘটনায় জড়িত আওয়ামী সমর্থকদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, আবুল হোসেন ফুয়াদ ও গোলাম মাওলাদের মধ্যে বিদেশে লোক পাঠানোর টাকা নিয়ে বিরোধ ছিল। কোপানোর ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ সর্বক্ষণিক কাজ করছে। গুরুতর রক্তাক্ত আহত ফুয়াদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু জখম গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।