প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৫১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের গাইডেড বোমা কিট ও সংশ্লিষ্ট সহায়তা বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ লক্ষ্যেই দেশটি গাইডেড বোমা কিট সরবরাহ ও সহায়তা প্রদানের বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এতে বলা হয়, ইসরায়েলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবেই এই বিক্রয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশন এজেন্সি (ডিএসসিএ) জানিয়েছে, সম্ভাব্য এ বিক্রয়ের আওতায় ইসরায়েল পাবে ৩ হাজার ৮৪৫টি কেএমইউ-৫৫৮বি/বি জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিনিশন (জেডিএএম) গাইডেন্স কিট, যা বিএলইউ-১০৯ বোমায় ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি দেশটি পাবে ৩ হাজার ২৮০টি কেএমইউ-৫৭২এফ/বি জেডিএএম কিট, যা এমকে-৮২ বোমায় ব্যবহৃত হয়। অস্ত্র সরবরাহ ছাড়াও থাকবে প্রকৌশল, সরবরাহ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা।
ডিএসসিএ বলেছে, “এই বিক্রয় প্রস্তাব ইসরায়েলকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে। বিশেষ করে এটি দেশটির সীমান্ত, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং জনবসতি রক্ষায় সহায়ক হবে।”
অস্ত্র বিক্রির এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এসেছে, যখন ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আক্রমণে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
শুধু সোমবারই ইসরায়েলি বিমান ও কামান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯৭ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এসব হামলার লক্ষ্য ছিল বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়কেন্দ্রসহ জনবহুল এলাকা।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলমান থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের এমন সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনা দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাসহ অনেকেই এ সিদ্ধান্তকে যুদ্ধাপরাধে যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিকভাবে জড়িত থাকার শামিল বলে অভিহিত করছেন।
এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এছাড়া গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) একটি মামলা চলমান রয়েছে।