দেড় শতাধিক মানুষকে জিম্মি করেছে হামাস : ইসরায়েল
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : ইসরায়েল থেকে ১৫০ জনেরও জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজা নিয়ে গেছে ওই ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। সোমবার এই তথ্য জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের প্রতিনিধি গিলাদ এরদান।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সাংবাদিক কাইটলান কলিন্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এরদান বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুসারে, ১৫০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক বর্তমানে হামাসের হাতে জিম্মি অবস্থায় রয়েছে। এটি একটি অভূতপূর্ব সংকট।’
‘আমরা আশা করছি,এই জিম্মিরা কেমন আছেন, তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা—রেডক্রস এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এ ব্যাপারে মনোযোগী হবে; কিন্তু হামাস যদি মনে করে যে, আমরা পিছু হটব— তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে। ইসরায়েল এবং তার নাগরিকদের ভবিষ্যৎকে নিরাপদ করার এই লড়াইয়ে আমরা পিছপা হব না।
২০২১ সালের জুন মাসের যুদ্ধবিরতির পর প্রায় ২ বছর ধরে প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা শেষে ৭ অক্টোবর শনিবার ভোররাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। একই সময়ে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে গোষ্টীটির প্রশিক্ষিত যোদ্ধারা।
যুদ্ধের প্রথম দিকে খানিকটা অপ্রস্তুত থাকলেও অল্প সময়ের মধ্যেই পূর্ণ শক্তি নিয়ে ময়দানে নামে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শনিবারের পর মাত্র দু’দিনের নোটিশে ৩ লাখ সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছেন।
সেই সঙ্গে হামাসের উদ্দেশে এক সতর্কবার্তায় বলেছেন, ‘ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে। আমরা এই যুদ্ধ চাইনি। সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও বিধ্বংসী কায়দায় আমাদের ওপর এই যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
‘ইসরায়েল এই যুদ্ধ শুরু করেনি, কিন্তু এ যুদ্ধের শেষ ইসরায়েলই করবে।’
সোমবার গাজা ভূখণ্ডে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল।
গত শনিবার হামাস হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৬ শ’রও বেশি মানুষ। এই নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯০০ জন ইসরায়েলের। বাকি ৭ শতাধিক মানুষ ফিলিস্তিনের।
তবে ইসরায়েলের নিহতদের মধ্যে ইসরায়েলিরা ছাড়াও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, ব্রাজিল, নেপাল, থাইল্যান্ড, ইউক্রেনসহ বিভিন্ন দেশের লোকজন রয়েছে।
সোমবারের সাক্ষাৎকারে গিলাদ এরদান সিএনএনকে বলেন, ‘অবশ্যই আমরা আমাদের ছেলে-মেয়ে, পরিবার-পরিজন— যারা অপহৃত হয়েছেন, আমরা তাদের ফিরে পেতে চাই; কিন্তু এখন আমাদের লক্ষ্য হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা। এই গোষ্ঠী যতদিন থাকবে, ততদিন আমরা ইসরায়েলের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারব না।’