জামিনে বের হয়ে বাদীর কান ছিঁড়ে নিলেন সেই মাদক ব্যবসায়ী
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত সুমন মিয়াকে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
প্রথম নিউজ, লালমনিরহাট: মাদক ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দেওয়া সেই সুমন মিয়ার কান ছিঁড়ে ফেলে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদক কারবারি শহিদুল ইসলাম ওরফে মিলন শিকদারসহ কয়েকজন জামিনে বেরিয়ে সুমনের ওপর এ অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী সুমন মিয়া।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত সুমন মিয়াকে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে রোববার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে মিলনসহ কয়েকজন সুমন মিয়ার পথরোধ করে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে মিলন কামড়ে সুমনের কানের একাংশ ছিঁড়ে ফেলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে সুমনের চিৎকারে কয়েকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে ঘটনার দায় এড়াতে নিজেই নির্যাতনের শিকার যুবকের হামলার শিকার হয়েছেন- এমন দাবি করে রোববার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হন মিলন। তবে গতকাল খোঁজ নিয়ে তাকে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি।
নির্যাতনের শিকার সুমন বলেন, জামিনে এসে মিলন ও তার লোকজন আমাকে হত্যার হুমকিসহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায়। এরই জেরে রোববার আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। যদিও আমি প্রাণে বেঁচে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে মঙ্গলবার দুপুরে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, ঘটনা শুনেছি। দুই পক্ষই এখনো হাসপাতালে ভর্তি। তবে কোনো পক্ষের লিখিত অভিযোগ পাইনি।
প্রসঙ্গত, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে’ মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দেওয়ার সন্দেহে মিলন ও তার লোকজন গত ২৫ জুলাই রাতে তুলে নিয়ে গিয়ে অপর এক মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সুমন মিয়ার ওপর নির্যাতন চালান। তাকে নগ্ন করে যৌনাঙ্গে দুই লিটার পানিভর্তি একটি বোতল ঝুলিয়ে কান ধরে উঠবস করানো হয়। সেইসঙ্গে মারধরের ভিডিও ধারণ করেন মাদক ব্যবসায়ীরা। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে মিলনসহ চারজনের নাম উল্লেখ এবং কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় পর্নোগ্রাফিসহ কয়েকটি ধারায় মামলা করেন সুমন মিয়া। এর কয়েকদিন পর রাজধানী থেকে চারজনকে আটক করে র্যাব। সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয় তারা।
শহিদুল ইসলাম মিলন ওরফে মিলন শিকদার উপজেলার লতবার গ্রামের প্রয়াত জমশের আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে এর আগে নাশকতাসহ একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে।