এমপির এপিএস পরিচয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

এমপির এপিএস পরিচয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

প্রথম নিউজ, বরিশাল: বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) পরিচয় দিয়ে স্থানীয়দের টিউবওয়েল দেওয়ার কথা বলে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মেহেদী হাসান মিঠু খান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তবে ওই নামে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর কোনো এপিএস নেই বলে জানিয়েছেন তার একান্ত সচিব খায়রুল বশার।

অভিযুক্ত মেহেদী হাসান মিঠু বরিশাল নগরীর কালিবাড়ি রোড এলাকার মৃত ইসাহাক আলী খানের ছেলে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন জনকে সরকারি টিউবওয়েল এনে দেওয়ার কথা বলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিঠু খান। কিন্তু কাউকেই টিউবওয়েল দেননি তিনি। এ ঘটনায় বানারীপাড়ার সলিয়াবাকপুর গ্রামের একাধিক ভুক্তভোগী মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।

সলিয়াবাকপুর এলাকার বাসিন্দা মাইনুদ্দিন মিয়া বলেন, চার মাস আগে ওই ব্যক্তি টিউবওয়েল দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। পরে আমার মাধ্যমে এই এলাকার আরও তিন জন ৬০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত টিউবওয়েল দেননি। এখন এলাকার তিন ভুক্তভোগী আমার কাছে টাকা ফেরত চাইছেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করবো আমি।

বরিশাল সদর উপজেলা চরবাড়িয়া এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুমন হাওলাদার বলেন, ছয় মাস আগে টিউবওয়েল দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নেন আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপির এপিএস মিঠু। এখন পর্যন্ত দেয়নি। টাকা ফেরত চাইলে হুমকি দিচ্ছে। একই ওয়ার্ডের নয়ন খানের কাছ থেকেও ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে দাবি ভুক্তভোগীর। তবে তিনিও টিউবওয়েল পাননি।

এভাবে চরবাড়িযা এলাকা থেকে কোটি টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর এপিএস মনে করে মন্ত্রণালয় থেকে স্বল্প টাকায় টিউবওয়েল বের করে দিতে পারবেন- এই আশায় সবাই টাকা দেন। কিন্তু মিঠু সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাগর সেরনিয়াবাত বলেন, মিঠু টিউবওয়েল দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকেও টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি বলেছি, দরকার নেই। তখন গ্রামের মানুষের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে দিতে বলেন। আসলে তিনি সবার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ বিষয়ে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর একান্ত সচিব খায়রুল বশার বলেন, আমি এমপির ব্যক্তিগত সচিব। মিঠু নামের কাউকে চিনি না। আর সে যদি নিজেকে এপিএস পরিচয় দেয়, এটা প্রতারণা এবং অপরাধ। ভুক্তভোগীদের মামলা করা উচিত।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান মিঠু বলেন, যারা অভিযোগ করেছে, তাদের কাউকে আমি চিনি না। এছাড়া এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পারিবারিকভাবে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে লেগে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি এক সময় আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর দপ্তরে নিযুক্ত ছিলাম। কিন্তু পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার কখনো করিনি। পারিবারিকভাবে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে লেগে এসব করাচ্ছে।