উল্লাপাড়ার সাবেক চেয়ারম্যান শওকাতের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অশ্লীল ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে।
প্রথম নিউজ, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমানের ব্যক্তিগত (পিএস) ও সলপ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জি. শওকাত ওসমানের এক নারীর সঙ্গে অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। পরিষদে আসা সুন্দরী নারীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের অনৈতিক প্রস্তাবসহ নানা অপকর্মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অশ্লীল ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকেই তার শাস্তি দাবি করছেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যান শওকাত ওসমানের দাবি ষড়যন্ত্রকারীরা এডিট করে তার ভিডিও ছেড়ে তাকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে।
ওই চেয়ারম্যানের হাত থেকে রেহাই পায়নি ছেলেরাও। উপকারভোগী নারী ও ছেলেদের সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করতেন। আর এরকম অশ্লীল আপত্তিকর ভিডিও পুরো ইউনিয়নবাসীসহ জেলাবাসীর মোবাইল ফোনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর এই ভিডিও সাংবাদিকের কাজে এসেছে।
২০২১ সালের ২৮ই নভেম্বর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ১৩নং সলপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ইঞ্জি. শওকাত হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরআগেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দুইবার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকেই তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ইউনিয়ন পরিষদে আসা সেবাপ্রার্থী নারীদের বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। আর ওইসব নারীর মোবাইল নম্বর রেখে দেন।
পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় কথাবলাসহ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার বা ইমোতে ভিডিও কলে কুপ্রস্তাব ও বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে নগ্ন হয়েও দেখাতেন নারীদের। এ নিয়ে লোকলজ্জার ভয়ে কোনো নারীই ইশওকাত ওসমান চেয়ারম্যানের এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পেতেন না।
এক নারী জানান, তিনি পরিষদে যান তার সন্তানের জন্মনিবন্ধন এবং চেয়ারম্যান সার্টিফিকেটের জন্য। ওই সময় চেয়ারম্যান তাকে পরদিন আসতে বলেন। তার কথামতো পরদিন আবার ইউনিয়ন পরিষদে যান। পরে তার মোবাইল নাম্বার নেন চেয়ারম্যান। এরপর চেয়ারম্যান তাকে সার্টিফিকেট ও জন্মসনদ দ্রুত পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান তাকে প্রতিনিয়তই তার মোবাইলে ফোন করতে থাকেন। একপর্যায়ে তার সঙ্গে ফেসবুকেও সংযুক্ত হন চেয়ারম্যান শওকাত। কিছুদিন পর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জরে ভিডিও কল দিয়ে তাকে কুপ্রস্তাব এবং নগ্ন হয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন। পরে ভিডিও কলটি স্ক্রিনশট দিয়ে রেখে দেন তিনি (ওই নারী)। পরবর্তীতে ওই নারী ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার কথা বললে চেয়ারম্যান তাকে মোবাইলে ফোন করে বিরক্ত করা বন্ধ করে দেন।
এদিকে, চেয়ারম্যান ইঞ্জি. শওকাত ওসমান তার কক্ষ থেকে এক নারীকে মোবাইল ফোনে উলঙ্গ হয়ে ওই নারীকে দেখায়। এই ভিডিওটি বর্তমানে ভাইরাল হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জি. শওকাত ওসমান জানান, আপত্তিকর ভিডিওটি এডিট করা। প্রতিপক্ষ তাকে ফাঁসাতে এ রকম ভিডিও বানিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে আপত্তিকর ভিডিও, এটা নোংরামি। তাই বিষয়টি চেয়ারম্যানের কাছেই জিজ্ঞাসা করা ভালো। তবে এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।