সিরিজ জিততে না পেরে ভারতীয় অধিনায়কের অভদ্র আচরণ, বাংলাদেশ দলের ‘ওয়াকআউট’
প্রথম নিউজ, স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের সাথে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিততে পারেনি ভারতীয় নারী দল। প্রথম ২ ওয়ানডেতে উভয় দল একটি করে ম্যাচ জেতায় আজকের খেলাটি পরিণত হয়েছিল অঘোষিত ফাইনালে। এমন এক ম্যাচ হয়েছে টাই। ফলে সিরিজ ভাগাভাগি করতে হয়েছে দুই দলকে। কিন্তু এ ম্যাচের ফল কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউর। আম্পায়ারের খেলা পরিচালনায় চরম অসন্তুষ্ট ভারতীয় অধিনায়ক। মাঠে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
ম্যাচ শেষে হয়ে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সময়ও অসন্তোষ ফুটে ওঠে তার আচরণ আর কথায়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হারের পেছনে কারণ কী ছিল জানতে চাইলে তিনি সরাসরি আম্পায়ারিংকে দায়ী করেন। বলেন, ‘প্যাথেটিক আম্পায়ারিং’। এটুকু বলেই ক্ষান্ত হননি ভারতীয় ক্যাপ্টেন। দুই দলের একসঙ্গে ছবি তোলার সময়ও বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করে বসেন তিনি। বলেন, শুধু তোমরা কেন, আম্পায়ারকেও নিয়ে আসো। এরপর বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি আরও কয়েকটি ছবি তোলার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দল নিয়ে ফেরত আসেন ড্রেসিংরুমে।
আজকের খেলায় (শনিবার) আম্পায়ারদের একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভারতীয় নারীরা। মারুফা আক্তারের বলে শেষ ব্যাটার মেঘনা সিংয়ের কট বিহাইন্ড সিদ্ধান্ত কিছুটা সময় নিয়ে দেন আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। ভারতের দুই ব্যাটার মাঠ না ছেড়ে তখন আপত্তি জানান। এর আগে নিজের আউটের সিদ্ধান্ত না মেনে ব্যাট দিয়ে স্টাম্প ভেঙে ফেলেন হারমানপ্রিত।
নাহিদা আক্তারের বলে লেগবিফোর উইকেটের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে হারমানপ্রিত ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যাট দিয়ে স্টাম্প ভেঙে ফেলেন। আম্পায়ারকেও কিছু বলেন। যদিও পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল তার ব্যাটে লাগলেও হারমানপ্রিত ঠিকই আউট। কারণ বল স্লিপে ক্যাচ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ফাহিমা তা ধরে ফেলেন।
এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত পাল্টে পরে হারমানপ্রিতকে ক্যাচ আউট দেওয়া হয়। ম্যাচের উত্তপ্ত অবস্থার রেশ ধরে প্রায় মধ্য তিরিশে পা রাখা ভারতীয় নারী দলের এই সিনিয়র ক্রিকেটার পুরস্কার বিতরণী আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতার মাঝেও নিজের মেজাজ হারিয়ে বসেন।
উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আজকের খেলা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। ক্রিকেটের বাইরেও আজ যে ধরনের আম্পায়ারিং হলো, এটা খুব অবাক করার মতো। এরপর বলেন, ‘এর পরে বাংলাদেশে আসার আগে এই ধরনের আম্পায়ারিং হবে, এটা ধরে নিয়ে সেভাবে প্রস্তুত হয়ে আসা নিশ্চিত করতে হবে।’
ভারতীয় হাইকমিশনার মাঠে উপস্থিত থাকার পরও তাকে পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে কেন রাখা হয়নি, এই প্রশ্নও তুলতে দেখা যায় হারমানপ্রিতকে। তবে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে হারমানপ্রিতের স্টাম্প ভাঙার ঘটনাকে ‘হিট অব দ্য মোমেন্টে’ ঘটে যাওয়া এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনা বলে মন্তব্য করেন ভারতের সহঅধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানা। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হারমানপ্রিতের অমন উগ্র ও বাজে আচরণকে আমলে নিতেও অনীহা স্মৃতি মান্ধানার।