অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
প্রথম নিউজ, অনলাইন: দ্বিতীয় বারের মতো ক্ষমতায় এসে আবারও অভিবাসীদের ওপর কঠোর হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আদেশ মেনে সি-১৭ বিমানে করে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী।
ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এ সম্পর্কিত একাধিক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন।
ট্রাম্প দায়িত্বগ্রহণের প্রথম দিনেই দক্ষিণ সীমান্তে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ জারি করেছেন এবং অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ‘রিমেইন ইন মেক্সিকো’ নীতি ফের কার্যকর করারও পরিকল্পনা করছেন। এর ফলে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চাওয়া ব্যক্তিদের আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মেক্সিকোতেই থাকতে হবে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিটও এক পোস্টে নিশ্চিত করেছেন যে, অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ফ্লাইট শুরু হয়েছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবার দুটি সামরিক বিমানে ৮০ জন করে অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গুয়াতেমালায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অভিবাসী ফেরানোর কর্মসূচির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন দক্ষিণ সীমান্তে আরও সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। এর মধ্যে থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর এলিট ৮২ এয়ারবোর্ন ডিভিশনের সেনারাও।
মেক্সিকো থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ঠেকাতে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে দুই দেশের সীমান্তে অতিরিক্ত ১৫ হাজার সেনা মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছিল।
ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনী প্রচারণার প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল সীমান্ত নিরাপত্তা। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি নির্বাহী আদেশে সই করে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়, আমেরিকার সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। অনিয়মিত অভিবাসনের কারণে দেশে বিশৃঙ্খলা ও ভোগান্তি বেড়েছে।
আদেশে সীমান্তে সশস্ত্র বাহিনীর মোতায়েন এবং ড্রোন ব্যবহারসহ অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, এই পদক্ষেপ ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। জনগণ দীর্ঘদিন ধরে এই মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিল।
অভিবাসন অধিকার কর্মীরা আশঙ্কা করছেন, সীমান্তে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি শরণার্থীদের বৈধ আশ্রয়ের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাছাড়া, বেসামরিক লোকদের বিরুদ্ধে সামরিক কৌশল ব্যবহারেরও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
তবে ট্রাম্প দাবি করেছেন, অনিয়মিত অভিবাসী প্রবেশ ঠেকাতে সামরিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। যদিও গবেষণায় দেখা গেছে, অনথিভুক্ত অভিবাসীদের অপরাধ প্রবণতা যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয়দের তুলনায় অনেক কম।
টিটিএন