সন্তানকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠিয়ে স্বামীর লাশ নিয়ে গ্রামে ফিরলেন স্ত্রী

রোববার রাতে ফুলগজীতে স্বামীর লাশ দাফন করা হয়েছে।  এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনে এ ঘটনা ঘটে।

সন্তানকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠিয়ে স্বামীর লাশ নিয়ে গ্রামে ফিরলেন স্ত্রী

প্রথম নিউজ, ফেনী: এইচএসসি পরীক্ষার্থী প্রথম সন্তান। পরীক্ষার আগমুহূর্তে রোববার সকালে মৃত্যু হয় স্বামীর। একদিকে স্বামীর লাশ গ্রামে নিয়ে গিয়ে দাফন করা, অন্যদিকে মেয়েকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানোর তাড়া। শোকাহত স্ত্রী মৃত স্বামীকে হাসপাতালের লাশ ঘরে রেখেই মেয়েকে পাঠালেন পরীক্ষাকেন্দ্রে। এরপর দুই শিশুপুত্রকে নিয়ে লাশ দাফনের জন্য রওনা হন শ্বশুরবাড়িতে। রোববার রাতে ফুলগজীতে স্বামীর লাশ দাফন করা হয়েছে।  এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনে এ ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তির নাম আবুল কাশেম। বিকালে তার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুনা স্বামীর লাশ নিয়ে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোসাইপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছান।

আবুল কাশেম একটি টোব্যাকো কোম্পানিতে চাকরি করতেন। দুই ছেলে- আবুল হাসনাত (২), মাহমুদুল হাসান (১৩), এক মেয়ে ফাহমিদা আক্তার ও স্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজার সদর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। রোববার ভোরে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে মেয়ে ফাহমিদা আক্তার এবার কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

রোকসানা আক্তার শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছেই স্বামী ও মেয়ের কথা বলে আহাজারি করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। এ সময় বাড়ির লোকজন নানাভাবে তাকে সান্ত্বনা দেন।

ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, মেয়েকে পরীক্ষাকেন্দ্রে রেখে স্বামীর লাশ নিয়ে রোকসানা আক্তারের বাড়িতে ফেরার ঘটনা এলাকার মানুষের মনে বিষাদের ছায়া ফেলেছে। বিকালে আসরের নামাজের পর পারিবারিক কবরস্থানে আবুল কাশেমের লাশ দাফন করা হয়। আবুল কাশেম গোসাইপুর গ্রামের মৃত মৌলভী হাফেজ উল্লাহর ছেলে। ছয় ভাইয়ের মধ্যে তিনি পঞ্চম ছিলেন।