সৌদিতে হামলার পরপরই ৩ দিনের যুদ্ধবিরতিতে হুথিরা

 সৌদিতে হামলার পরপরই ৩ দিনের যুদ্ধবিরতিতে হুথিরা
সৌদিতে হামলার পরপরই ৩ দিনের যুদ্ধবিরতিতে হুথিরা-প্রথম নিউজ

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : সৌদি আরবের আরামকো তেল স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ব্যাপকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পরপরই তিনদিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীরা। এমনকি সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট যদি সামরিক অভিযান বন্ধ করে তবে একটি ‘স্থায়ী’ যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে গোষ্ঠীটি। শনিবার (২৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

শনিবার হুথি বিদ্রোহীদের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পরিষদের প্রধান মাহদি আল-মাশাত এই একতরফা যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন দিনের জন্য যোদ্ধারা সকল ধরনের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ রাখবে।

এদিকে মাহদি আল-মাশাতের বরাত দিয়ে ইয়েমেনের আরবি ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল আল-মাসিরা জানিয়েছে, ইয়েমেনের জল, স্থল এবং আকাশপথ সব জায়গায় এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।মাহদি আরও বলেন, সৌদি আরব যদি ইয়েমেনের ওপর হামলা বন্ধ ও অবরোধ প্রত্যাহার করে, বিদেশী সেনা সরিয়ে নেয় এবং স্থানীয় যোদ্ধাদের সমর্থন দেওয়া বন্ধ করে তাহলে হুথি যোদ্ধারাও স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি পালনে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া বন্দি থাকা হুথি যোদ্ধাদের মুক্তি দেয় তাহলে সৌদি আরবের সকল বন্দি এমনকি ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদির ভাইকেও মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।

গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আরব বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ ইয়েমেন ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। বিদ্রোহী বাহিনী দেশটির কেন্দ্রীয় শহর মারিব এবং উপকূলীয় শহর হোদেইদাকে টার্গেট করেছে। অন্যদিকে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট রাজধানী সানা এবং অন্যান্য বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বিমান হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে।

ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ‘ছায়াযুদ্ধ’ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এই দেশ।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom