এ মাসেই পাকিস্তান সফরে আসতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
পাকিস্তানের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী মিয়া মুহাম্মদ মানশা বলেছেন, ভারতের সঙ্গে ‘ব্যাকডোর’ বা পর্দার অন্তরালে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। এতে ভাল ফল আসতে পারে।
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : পাকিস্তানের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী মিয়া মুহাম্মদ মানশা বলেছেন, ভারতের সঙ্গে ‘ব্যাকডোর’ বা পর্দার অন্তরালে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। এতে ভাল ফল আসতে পারে। লাহোর চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এলসিসিআই) বুধবার ব্যবসায়ীদের এক সমাবেশ ডাকে। সেখানে নিশাত গ্রুপের চেয়ারম্যান মিয়া মুহাম্মদ মানশা এ আশা প্রকাশ করেন। তার ভাষায়, ‘যদি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত হয়, তাহলে এ মাসেই পাকিস্তান সফরে আসতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।’ এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডন-এর অনলাইন সংস্করণ। বক্তব্যে উভয় দেশের মধ্যে বিরোধ সমাধানের পরামর্শ দেন পাকিস্তানের এই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং আহ্বান জানান, এ অঞ্চলে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য শুরুর। তিনি বলেন, ‘যদি অর্থনীতির উন্নতি না হয়, তাহলে দেশ এক বিপর্যয়কর পরিণতির মুখে পড়তে পারে। তাই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করা উচিত পাকিস্তানের। একই সঙ্গে আঞ্চলিক অর্থনীতিকে উন্নত করার বিষয়টি সামনে আনা উচিত। ইউরোপ দুটি বড় যুদ্ধ করেছে। তা সত্ত্বেও তারা শান্তি ও আঞ্চলিক উন্নয়ন করেছে। স্থায়ী শত্রুতা বলতে কিছু থাকতে পারে না।’
২০১৯ সালের ৫ই আগস্ট দখলীকৃত কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে দেয় নয়া দিল্লি। নতুন আইন করে তারা। তখন থেকেই পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত আছে। এরই মধ্যে গত গ্রীষ্মে একটি আশার খবর শোনা যায়। বলা হয়, এই দুটি দেশের মধ্যে অর্থনীতিকে সচল করতে উপসাগরীয় একটি দেশের উদ্যোগে পর্দার আড়ালে আলোচনা চলছে। পাকিস্তান সরকারের দাবি, দখল করে নেয়া কাশ্মীরের জনগণের ওপর ভারত যে নিষ্পেষণ চালাচ্ছে, তাতে এই আলোচনা আর অব্যাহত রাখা হয়নি। কাশ্মীর উপত্যকা থেকে ভারত তাদের সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয়নি। পুনর্বহাল করেনি কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন।
মিয়া মানশা বলেন, সফলতার ক্ষেত্রে মূল চাবিকাঠি হলো আভ্যন্তরীণভাবে প্রগতিশীল ও বাজারভিত্তিক নীতি। তিনি আরো বলেন, মূল্য নিয়ন্ত্রণ থেকে পুঁজি বাজার পরিচালনা, বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা কমানো এবং অর্থনীতিতে রাষ্ট্রীয় প্রভাব কমিয়ে, বিশেষ করে বেসরকারিকরণ ও কঠোরতার মাধ্যমে সত্যিকারভাবে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে পাকিস্তান। মিয়া মানশা বলেন, অর্থনীতিতে বিভিন্ন সেক্টরকে প্রমোট করে বেসরকারিকরণ। এক্ষেত্রে টেলিযোগাযোগ খাত একটি উদাহরণ। এ খাতকে বেসরকারিকরণের ফলে প্রত্যেকে টেলিফোন থেকে শুরু করে সস্তায় ফোন কল করার সব রকম সুবিধা পাচ্ছেন।
মিয়া মানশা বলেন, ‘রাষ্ট্রের ভাল কাজের প্রশংসা করা উচিত। এটা ভাল খবর যে, দেশেই মোটরওয়ে তৈরি হয়েছে। দ্রুত উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রকে ওইসব খাতের দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে, যেখানে বার্ষিক ভিত্তিতে শত শত কোটি রুপি লোকসান হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) সহ বিমানবন্দরগুলোকে বেসরকারিকরণের মাধ্যমে এসবের কার্যকারিতা, মান বৃদ্ধি পাবে। অর্থনৈতিক হয়ে উঠবে এসব খাত। বৃটিশ শাসনের সময়ে একটি লোভনীয় প্রতিষ্ঠান ছিল রেলওয়ে। কিন্তু এখন এটা রাষ্ট্রের জন্য একটি বোঝা হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের উচ্চমূল্যের অন্যতম কারণ হলো রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ।’
এ সময় তিনি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বলেন, ইউরোপের উন্নয়নের অন্যতম কারণ হলো তারা তাদের সীমান্তকে শিথিল করেছে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, অন্য কোনো দেশের গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ দেয়া হয় না। এতে সম্পদের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়। ‘এই সিস্টেম রাষ্ট্রের ওপর একটি বোঝা। এ জন্য ব্যুরোক্রেসির কাঠামোতে বড় পরিবর্তন প্রয়োজন।’
পাকিস্তানে বৃটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট্রের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মিয়া মানশা। এ জন্য তাকে অভিনন্দন জানান এলসিসিআই প্রেসিডেন্ট মিয়া নউম্যান কবির।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: