সুদানে প্রায় ৩০০ জনকে হত্যা করেছে আরএসএফ বাহিনী, রেহাই পায়নি নারী-শিশু

প্রথম নিউজ, অনলাইন: সুদানের উত্তরের করদোফান রাজ্যে সশস্ত্র আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর হামলায় প্রায় ৩০০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। মানবাধিকারকর্মীরা এই খবর জানিয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই হামলা গতকাল সোমবারও চলেছে।
ইমারজেন্সি লইয়ার্স নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন জানায়, বারা শহরের আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে আরএসএফ-এর সশস্ত্র সদস্যরা ব্যাপকভাবে হামলা চালায়।
ওই শহর বর্তমানে আরএসএফ-এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংগঠনটির ভাষ্য অনুযায়ী, শাগ আলনোম নামের একটি গ্রামে আগুন লাগিয়ে এবং গুলি করে ২০০ জনের বেশি মানুষ হত্যা করা হয়েছে। আশেপাশের অন্যান্য গ্রামেও লুটপাট ও সহিংসতার ঘটনায় কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত হন এবং অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
গত রবিবার হিলাত হামিদ নামের অপর একটি গ্রামে হামলা চালিয়ে ৪৬ জনকে হত্যা করা হয়, যাদের মধ্যে গর্ভবতী নারী ও শিশুরাও ছিল বলে জানিয়েছে ইমারজেন্সি লইয়ার্স।
জাতিসংঘ জানায়, সংঘর্ষের ফলে ৩ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আহত ও নিখোঁজদের প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংগঠনটি আরো জানায়, ‘এই গ্রামগুলোতে কোনো সামরিক ঘাঁটি বা অস্ত্রভাণ্ডার ছিল না। তাই স্পষ্টভাবে বলা যায়, এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে চরমভাবে উপেক্ষা করে সংগঠিত এক নির্মম গণহত্যা।
’ এই বর্বরতার সম্পূর্ণ দায় আরএসএফ নেতৃত্বের ওপর বর্তায় বলেও তারা অভিযোগ করে।
যুক্তরাষ্ট্র ও একাধিক মানবাধিকার সংগঠন আরএসএফ-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ এনেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তারা সহিংস লুটপাট ও গণহত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে আরএসএফ নেতৃত্ব জানিয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে এইসব অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সুদানের গৃহযুদ্ধ এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটে পরিণত হয়েছে।
দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ অনাহারে ভুগছে এবং কলেরাসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এদিকে বৈশ্বিক সাহায্যের ঘাটতির কারণে মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
সূত্র : রয়টার্স