সকল মার্কেট-বিপনী বিতানে সরকারের ছত্রছায়াই চাঁদাবাজী হচ্ছে: ড. মোশাররফ
তিনি বলেন, এদেশে যারা শাসন করেন এবং এই অবৈধ সরকারের যারা পেটুয়া বাহিনী তাদের চাঁদাবাজীর কারণেই নিউ মার্কেটের ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: ঢাকাসহ সারাদেশের সকল মার্কেট-বিপনী বিতানে সরকারের ছত্রছায়াই ‘চাঁদাবাজী’ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই আহবান জানান। নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া বিএনপির মহানগর নেতা মকবুল হোসেনের মুক্তি ও নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এদেশে যারা শাসন করেন এবং এই অবৈধ সরকারের যারা পেটুয়া বাহিনী তাদের চাঁদাবাজীর কারণেই নিউ মার্কেটের ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। শুধু নিউ মার্কেটের ঘটনা নয়, ঢাকা শহরসহ সারা বাংলাদেশের সকল মার্কেটের আজকে কারা চাঁদাবাজী করছে? সরকারের ছত্রছায়ায় যারা সরকারি দল করে, তাদের অঙ্গসংগঠন করে তারা চাঁদাবাজী করছে। জনগনের প্রথম প্রশ্ন নিউ্ মার্কেটের ঘটনা কেনো? চাঁদাবাজীর জন্য। করেছে কারা? আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থকরা।”
নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘটিত ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এই নিউ্ মার্কেটের দোকানিদের প্রতিবাদকে বন্ধ করে দেয়ার জন্য যারা হামলা করে এসে এভাবে নিসংস্ব ঘটনা ঘটিয়েছে দুই নিহত হয়েছে, বহু আহত হয়েছিলো এরা কারা? যারা চাঁদাবাজী করেছিলো সেই কথাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটিয়েছে। আজকে জনগণের প্রশ্ন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না। অথচ মকবুল হোসেন তিনি আমাদের নেতা এবং নিউ মার্কেটে তার দোকান আছে এটাই তার দোষ। সেজন্য আজকে গ্রেফতার এবং তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। আশ্বর্য়ের বিষয় সেলুকাস এই বাংলাদেশ আমরা দেখছি। এইরকম ঘটনা গত ১৪ বছর তারা বহু ঘটিয়েছে। আমরা দে্খেছি সেখানে প্রতিবাদ সেখানেই এই সরকার ঝাঁপিয়ে পড়েছে বানোয়াট মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, আজকে আমরা এই রমজান মাসে প্রতিবাদ করতে এসেছি। আমি শুধু বলতে চাই, এই নিউ মার্কেটের দোকানিরা প্রতিরোধ শুরু করেছে। হেলমেটধারীরা এই প্রতিরোধকে দমন করার জন্য মানুষ হত্যা করেছে। আমি অবিলম্বে হেলমেটধারীদের গ্রেফতার ও তাদের বিচার চাই। অনবিলম্বে মকবুল হোসেনের মুক্তি চাই এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার চাই।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশের অপশাসন থেকে মুক্ত হতে হলে, জনগণকে রক্ষা করতে হলে আমাদের সামনে একটি পথই উন্মুক্ত। সেটা হচ্ছে, এই বাংলাদেশ থেকে যারা গায়ের জোরে বিনাভোটে রাতের অন্ধকারে ডাকাতি করে ক্ষমতায় রয়েছে, তাদের হাত থেকে এই দেশকে রক্ষা করা। এ্ই রক্ষার মাধ্যমে একটা স্থায়ী সমাধান দেশের কোটি কোটি মানুষ বলছে। আমাদের একটিই কথা শেখ হাসিনাকে বিদায় নিতে হবে, শেখ হাসিনার স্বৈরাচারি ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় নিতে হবে। এই বিদায় নেওয়ার জন্য আজকে আমাদেরকে সকলকে রাস্তায় নামতে হবে, আরো ব্যাপকভাবে রাস্তায় নামতে হবে। বিএনপি, তার অঙ্গসংগঠন, এদেশের এদেশের সকল গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তি এবং আমাদের দলসহ সকল দল এবং ব্যাক্তির প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে হটাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, আজকে আমরা খন্ড খন্ড প্রতিবাদ করতে পারি। কিন্তু সমস্যার সমাধান এই সরকারকে হটানো।এই সরকার ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার। কোনো স্বৈরাচারি ফ্যাসিবাদী সরকার স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়ে নাই। তাই এই স্বৈরাচারি সরকারকেও গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরাতে হবে। আমাদের সকলকে সেজন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমি আজকে আহবান জানাই, ইনশাল্লাহ আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে জনগণের মধ্যে ইস্পাতকঠিন ঐক্য সৃষ্টি করতে পারলে অনতিবিলম্বে আমরা শেখ হাসিনার শাসন থেকে এদেশের জনগণকে মুক্ত করতে পারবো।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের এই প্রতিবাদ প্রতিটি এলাকায় ছড়িয়ে দিতে হবে। বড় রাস্তা, ছোট রাস্তা, অলি-গলি-পাড়া-মহল্লায় সব জায়গায় প্রতিবাদের ঝড় তুলতে হবে। তা না হলে আমরা যে লক্ষ্য অর্জন করতে চাই সেই লক্ষ্য অর্জন দুরহ হবে। আমাদের লক্ষ্য কী? অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে সম্ভব না। এই সংসদ বাতিল না হলে সম্ভ্ব না। দল নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে সেই নির্বাচনে জনগন ভোট দিতে না পারবে না। এটা বিজ্ঞানাগার থেকে আরম্ভ করে সব কিছুতে পরীক্ষিত। সেই কারণেই বিএনপি সিদ্ধান্ত এই সরকারের অধীনে কোনো প্রহসনের নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না।
নিউ মার্কেটের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা প্রতিবাদ করছি নিউ মার্কেট এলাকায় ঘটনা নিয়ে। ঢাকা শহরের যত মার্কেট আছে সব মার্কেটেরই এই বেহাল অবস্থা। এখানে(নিউ মার্কেট) ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করেছে সেই কারণে মারা-মারি যাই বলে হয়েছে। শুধু এটাই নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামনে যে মার্কেটগুলো আছে তারা বছরের বছরের পর বছরের, বছরের পর বছর পেমেন্ট দিয়ে যাচ্ছে। আজকে শেখ হাসিনা ছাত্র লীগের নেতা-কর্মীদেরকে চাঁদাবাজী, ছিনতাই থেকে আরম্ভ করে এমন কোনো অপকর্ম নাই যে অপকর্মের মধ্য দিয়ে অর্থ লুটপাট করা একটি অভ্যারণ্য সৃষ্টি করেছে। ১০ লক্ষ কোটি টাকা তো এমনি হয় নাই। এই ছোট-বড়-মাঝারি, দরবেশ থেকে আরম্ভ করে তাদের লুটপাটের টাকাই বিদেশে ১০ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্আপাদক বদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর দক্ষিন-উত্তরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews