ফায়ার সার্ভিসে হামলা: মামলার প্রতিবেদন দাখিলের নতুন তারিখ
প্রথম নিউজ, ঢাকা : রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরে ফায়ার ফাইটারদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়েছে। প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মামলার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক সমীরন মণ্ডল প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। তাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দার আদালত প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গত ৭ এপ্রিল ফায়ার সার্ভিসে হামলার ঘটনায় বংশাল থানায় মামলা করেন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন আলম। বঙ্গবাজারে অগ্নিনির্বাপণের সময় হামলা ও ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে অজ্ঞাত ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে এ মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিসের সদর দফতরে হামলায় সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। অতর্কিত এ হামলায় ভাঙচুর করা হয় ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন মডেলের ১৪টি গাড়ি, মেন গেটের সেন্ট্রি পোস্ট, প্রশাসনিক ভবন ও সিনিয়র স্টেশন অফিসারের অফিস। হামলায় আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা। শুধু তাই নয়, হামলায় সিনিয়র কর্মকর্তাসহ আহত হন ফায়ার সার্ভিসের চার সদস্য।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করে বলেন, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৬টা ১০ মিনিটে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অফিসার ও ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে নিয়ে গাড়ি, পাম্প ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি।
আগুনের ভয়াবহতা দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন স্টেশনের ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট, পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক টিমের সহায়তায় আগুন নেভানোর কাজ চলছিল। সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে সিদ্দিক বাজারে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরে হামলার ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জন হাতে লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে।
উচ্ছৃঙ্খল জনতা একযোগে অফিসে প্রবেশ করে সরকারি কাজে বাধা দেয়। সে সময় তারা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের বিভিন্ন সদস্যকে মারধর শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম ও পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জনতাকে থামাতে গেলে তাদেরও হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। তারা জীবন রক্ষার্থে দৌড়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের ভেতরে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, অজ্ঞাত আসামিরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের ভেতরে প্রবেশ করে লোহার রড, লাঠি ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে মোট ১৪টি বিভিন্ন মডেলের গাড়ি ব্যাপক ভাঙচুর করে। তারা কইকা ভবন, মেন গেটের সেন্ট্রি পোস্ট, প্রশাসনিক ভবন ও সিনিয়র স্টেশন অফিসারের অফিস ব্যাপকভাবে ভাঙচুর চালায়।
এ সময় বাধা দিলে তারা ফায়ার ফাইটার ইসলাম অন্তরকে লোহার রড দিয়ে ডান পায়ে আঘাত করে জখম করে। হত্যার উদ্দেশ্যে উপ-পরিচালক বাবুল চক্রবর্তীর মাথা ও ডান হাতে লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করে গুরুতর জখম করে দুর্বত্তরা। লাঠি দিয়ে পিঠে আঘাত করে জখম করা হয় চালক ইমন হোসেনকেও। তারা সবাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
হামলার পুরো ঘটনা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে রয়েছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জন আসামি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে হামলা ও সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে।
Google News Logoবাংলা ট্রিবিউনের খবর পেতে গুগল নিউজে ফলো করুন