ফাইলপ্রতি অগ্রিম ৩০০ টাকা করে নেন সহকারী কমিশনার!

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ করেন গার্মেন্টস এক্সসোরিজ ও স্টেশনারি ব্যবসায়ীরা।

ফাইলপ্রতি অগ্রিম ৩০০ টাকা করে নেন সহকারী কমিশনার!

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ফাইলপ্রতি ন্যূনতম তিন শ টাকা ঘুষ আদায়সহ অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগে সাভারে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বিভাগের কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার নূরুন নাহার সিদ্দিকার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। এ সময় বহিরাগতদের দিয়ে অফিস কার্যক্রম পরিচালানার অভিযোগও করেন তারা। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ করেন গার্মেন্টস এক্সসোরিজ ও স্টেশনারি ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, আমরা সকল নির্দেশনা মেনে ব্যবসা করছি। কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও প্রতিটি ফাইল আটকে ন্যূনতম ৩০০ টাকা ঘুষ আদায় করেন সহকারী কমিশনার। আগে যেখানে এক থেকে দুই দিনে ফাইল প্রস্তুত হতো, এখন সেখানে ঘুষ দিয়েও প্রায় ১৫ দিন সময় লেগে যাচ্ছে। আগে কর্মকর্তারা সরাসরি ঘুষ নিতেন কাজও সরাসরি হয়ে যেত। কিন্তু এখন প্রতিটি ফাইলের জন্য অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়। অগ্রিম টাকা দিয়েও প্রায় ১৫/২০ দিন ফাইল আটকে থাকে।

ঝুট ব্যবসায়ী বাহার বলেন, ঘুষ না দিলে ঝুটের ফাইল আটকে রাখেন সহকারী কমিশনার নুরুন নাহার সিদ্দিকা। এমন অবস্থায় কারখানায় ঝুটসহ অন্যান্য মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে অনেক খারাপ আচরণ করেন এবং লাইসেন্স বাতিল করার হুমকি দেন। এতে করে ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে আজ বিক্ষোভে নেমেছেন।

এদিকে বিক্ষোভ মিছিল ও কর্মবিরতির কারণে ডিইপিজেডে পোশাকবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। এ সময় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা  কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার নূরুন নাহার সিদ্দিকা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।

বিক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বলেন, ব্যবসার শুরু থেকেই প্রতিটা ফাইলের জন্য ৩০০ টাকা করে ঘুষ দিতে হচ্ছে। প্রায় তিন বছর ধরে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার এই ঘুষ আদায় করে চলেছেন। আমরা বাধ্য হয়েই ঘুষ দিচ্ছিলাম। সম্প্রতি তারা আমাদের কাছ থেকে অগ্রিম ঘুষ আদায়ের জন্য ব্যক্তিগত চারজন লোক নিয়োগ দিয়েছেন। যারা আগে ঘুষ নেন কিন্তু কর্মকর্তারা আমাদের ফাইল আটকে রাখেন। এতে করে বিভিন্ন মালামাল কারখানায় সরবরাহ করতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট সহকারী কমিশনার নুরুন নাহার সিদ্দিকা বলেন, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়া কোনো কথা বলতে পারব না। আমার বিরুদ্ধে ব্যাবসায়ীরা যেসব অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি অনৈতিকভাবে আমি এক গ্লাস পানিও খাই না। বহিরাগত যারা অফিসে আসতেন তাদের আমি বের করে দেওয়ায় এ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।